বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের মালিক জনগণ, জনগণই বিএনপির শক্তির একমাত্র উৎস।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, বিগত বছরগুলোতে মানুষের কথা বলার অধিকার, ভোট প্রদানের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ধ্বংস করা হয়েছিল জবাবদিহিতা ও গণতন্ত্র। এভাবে ধীরে ধীরে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছরে জনগণ এই দেশকে বাঁচানোর জন্য যখন রাজপথে নেমে এসেছিল। আমরা দেখেছি শুধু জনগণ না, কোমল শিশুরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। শিশুসহ অনেককেই নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু বিজয় হয়েছে দেশের জনগণের। শুধু ক্ষমতা ছাড়া নয়, দেশ থেকে পালিয়ে যেতে হয়েছে তাদের। বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা স্বেচ্ছাচারিতার পতন হয়েছে।’
দেশের মানুষকে নিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘এখন মানুষের প্রত্যাশা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের ৩১ দফার বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই দেশকে জনগণের হাতে তুলে দিতে হবে।’
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সম্মেলনে উপস্থিত নেতাকর্মীদের দুটি বিষয় প্রতিজ্ঞা করার আহ্বানও জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ‘দেশকে জনগণের প্রত্যাশিত দেশ হিসেবে পরিণত করতে হবে এবং যে পর্যন্ত দেশের জনগণ গণতন্ত্রের ট্রেনে না উঠবে সে পর্যন্ত আমাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে একসাথে কাজ করে যেতে হবে।’
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ। এই ঠাকুরগাঁও একটা সময় আওয়ামী লীগের ঘাঁটি ছিল। কিন্তু এই ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ আবারও আওয়ামী লীগকে তাড়িয়ে বিএনপির ঘাঁটিতে পরিণত করেছে। আজকে বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ চাচ্ছেন এই দেশে গণতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। আর সেটা তারেক রহমানের নেতৃত্বের মাধ্যমেই হোক।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে নির্যাতিত হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। অথচ কয়েকজন এখন বলছে তাদের শহীদদের বিনিময়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে বিতাড়িত করেছে। যাদের আমরা ভালো ভেবে দেশের নেতৃত্বের জায়গায় বসিয়েছিলাম তারা বলছে এক স্বেচ্ছাচারী শাসককে তাড়িয়েছি, আর কোনো স্বেচ্ছাচারী শাসককে আমরা চাই না। তারা এ কথার মাধ্যমে কাদের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এ সাহস তারা পায় কোথায়? অথচ ২৪-এর আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি শহীদ হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরাই।’
দীর্ঘ ৮ বছর পর উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থী বিএনপি নেতা শরিফুল ইসলাম শরিফসহ ৮ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহারও করেছেন। ৩ জন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে ছাতা মার্কার প্রার্থী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান পয়গাম আলী ৩৫১ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। আর সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোটভাই মির্জা ফয়সল আমীন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।