ঢাকা রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফরিদপুরে অবরোধ: ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ বন্ধ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫, ০১:০৭ পিএম
ফরিদপুরে রেলপথ অবরোধ স্থানীয়দের। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিনে আজ ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশাপাশি রেলপথ অবরোধ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন বিভিন্ন পরিবহনের চালক ও যাত্রীরা।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা থেকে শত শত বিক্ষোভকারী মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ও রেলপথে অবস্থান নিতে শুরু করেন।

হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সকাল ৭টা থেকে শত শত বিক্ষোভকারী মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন। তারা গাছের গুঁড়ি ফেলে এবং আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের মনসুরাবাদ ও সুয়াদি এলাকায় এবং ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পুখুরিয়া, হামিরদী ও নওয়াপাড়া এলাকায় আন্দোলনকারীরা অবস্থান করছেন। এ ছাড়া, ভাঙ্গা গোলচত্বরেও বিক্ষোভ চলছে। 

আন্দোলনকারীরা জানান, ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-৪ আসন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার সরকারি গেজেট বাতিল করতে হবে। দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনের মাত্রা আরো বাড়বে বলে হঁশিয়ারি দেন তারা।
 
আন্দোলনকারী রহিম মণ্ডল বলেন, ‘আমরা ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। আমাদের আলগী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে আটক করা হয়েছে, যে কোনো সময় আমাদেরও আটক করা হতে পারে। আমরা আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ তুলব না।’

গুলজার রহমান নামে অপর আন্দোলনকারী বলেন, ‘এই কর্মসূচি তিনদিন চলবে। প্রয়োজনে আমরা সাত দিন সড়ক অবরোধ করব। আমাদের প্রাণের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রেলপথের ওপরও শুয়ে থাকব।’

ফরিদপুরে মহাসড়ক  অবরোধ স্থানীয়দের। ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

ট্রেন অবরোধের কথা জানিয়ে ভাঙ্গা রেলস্টেশনের মাস্টার সাকিবুর রহমান বলেন, ‘রাজবাড়ী থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল নকশিকাঁথা ট্রেন। এই ট্রেনটি বিক্ষোভকারীরা আটকে দেওয়ায় ভাঙ্গা জংশনে ঢাকা থেকে আসা রাজবাড়ীগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস আটকা পড়েছে। এছাড়া খুলনা তথা দক্ষিণ অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।’

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি রোকিবুজ্জামান বলেন, ‘এত বড় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ, র‍্যাব এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করতে মহাসড়কে একটি জলকামান নামানো হয়েছে।’

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) আসিফ ইকবাল বলেন, ‘সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ কমাতে প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। ভোর থেকেই চারজন ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রায় এক হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মহাসড়কে টহল দিচ্ছেন। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।