ধূমপান যে ফুসফুসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। এটি ধীরে ধীরে শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিস, এমনকি ফুসফুস ক্যানসার–এর মতো প্রাণঘাতী রোগের জন্ম দিতে পারে। তবুও বাস্তবতা হলো অনেকে বিভিন্ন কারণে এখনই ধূমপান ছাড়তে পারছেন না।
তবে কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও সচেতনতা অবলম্বন করলে ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব কিছুটা হলেও কমিয়ে ফুসফুসকে তুলনামূলক ভালো রাখা সম্ভব। চলুন দেখে নেওয়া যাক এমন কিছু কার্যকর উপায়।
ধূমপান করেও ফুসফুস ভালো রাখার ৬টি উপায়
নিয়মিত শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন: ‘প্রাণায়াম’ বা ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ৫–১০ মিনিট সময় নিয়ে ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে ছাড়ার অভ্যাস গড়ে তুললে ফুসফুসে জমে থাকা দূষিত বায়ু বেরিয়ে আসতে পারে।
স্টিম থেরাপি বা গরম পানির ভাপ নিন: স্টিম ইনহেলেশন ফুসফুস পরিষ্কারে অত্যন্ত কার্যকর। এক বাটি গরম পানির ভাপ নাক ও মুখ দিয়ে দিনে একবার নেওয়ার অভ্যাস করলে শ্বাসনালিতে জমে থাকা মিউকাস সহজে বের হয়ে যায়।
অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি খাবার খান: ধূমপান ফুসফুসে প্রদাহ সৃষ্টি করে। তাই নিয়মিত আদা, হলুদ, রসুন, গ্রিন টি, তুলসী পাতা এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার (যেমন সামুদ্রিক মাছ, বাদাম) খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে ফুসফুসের প্রদাহ কমবে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: প্রতিদিন অন্তত ৮–১০ গ্লাস পানি পান করুন। এতে মিউকাস পাতলা হয় এবং সহজে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে। হাইড্রেশন বজায় রাখা ফুসফুস পরিষ্কারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ধুলাবালি ও দূষণ এড়িয়ে চলুন: ধূমপানের পাশাপাশি দূষণ থাকলে ফুসফুসের ক্ষতি বহুগুণে বেড়ে যায়। তাই বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন এবং চেষ্টা করুন গাছপালা ঘেরা বা খোলামেলা পরিবেশে বেশি সময় কাটাতে।
খালি পেটে ধূমপান করবেন না: খালি পেটে ধূমপান ফুসফুস ও হজমতন্ত্রের জন্য আরও বেশি ক্ষতিকর। এতে অ্যাসিডিটি, শ্বাসনালিতে জ্বালাভাব ও ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
এই অভ্যাসগুলো ধূমপানের ক্ষতি পুরোপুরি ঠেকাতে না পারলেও, ফুসফুসের উপর চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকতে হলে ধূমপান সম্পূর্ণভাবে ত্যাগ করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনার ফুসফুস আপনার জীবনের শ্বাসপ্রবাহ। তাকে গুরুত্ব দিন, যত্ন নিন।
আপনার মতামত লিখুন :