আজকের তরুণ-তরুণীরা ভ্রমণে আর আগের মতো তাড়াহুড়োর পক্ষপাতী নন। ছুটি মানেই ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে দৌড় নয়, বরং ধীরে-সুস্থে প্রকৃতি, সংস্কৃতি আর মানুষকে বুঝেশুনে উপভোগ করাই এখনকার ভ্রমণপিপাসুদের নতুন ধারা। এই নতুন ভ্রমণধারার নামই হচ্ছে, ‘স্লো ট্রাভেল’।
‘স্লো ট্রাভেল’ কী?
‘স্লো ট্রাভেল’ মূলত এমন এক ভ্রমণপদ্ধতি, যেখানে কম সময়ের মধ্যে বেশি জায়গা ঘুরে দেখার চাপ নেই। বরং এক জায়গায় দীর্ঘ সময় থাকায় স্থানীয় জীবনযাত্রা, খাবার, সংস্কৃতি এবং মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
অনেকে যেমন ছুটিতে গিয়ে ৫-৬ দিনে ৮টি গন্তব্যে ছুটে বেড়ান, সেখানে ‘স্লো ট্রাভেল’ অনুসরণকারীরা ৫ দিন একই শহরে থেকেও প্রতিটি অলিগলি ঘুরে দেখেন, ধীরে ধীরে শহরের ছন্দের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেন।
কেন জনপ্রিয় হচ্ছে এই ট্রেন্ড?
সারা বছর অফিস বা পড়াশোনার চাপ সামলে যখন ছুটি মেলে, তখন ভ্রমণটাই হয়ে ওঠে মানসিক প্রশান্তির বড় মাধ্যম। তবে সেই ভ্রমণ যদি হয় তাড়াহুড়োর, তাহলে সেটাও হয়ে দাঁড়ায় আরেকটি চাপ। তাই অনেকেই এখন চান ‘ভ্রমণ হোক ধীর গতির, হোক উপলব্ধির’। সেখান থেকেই ‘স্লো ট্রাভেল’-এর প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।
‘স্লো ট্রাভেল’-এর সুবিধা
পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ভ্রমণস্থানের মানুষ, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভাষা সম্পর্কে গভীর ধারণা পাওয়া যায়। অফবিট বা কম পরিচিত স্থানগুলো ঘুরে দেখা যায়, যা সাধারণ পর্যটকের চোখে পড়ে না। ভ্রমণের সঙ্গে সঙ্গে অনেকেই রিমোট অফিসের কাজ চালিয়ে নিতে পারেন। দীর্ঘ সময় এক জায়গায় থাকার ফলে তা অর্থনৈতিকভাবেও সুবিধাজনক হয়ে ওঠে।
‘স্লো ট্রাভেলে’ কারা উপকৃত হবেন?
বিশেষ করে যারা ভ্রমণব্লগিং বা কনটেন্ট ক্রিয়েটিংকে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন তাদের জন্য ‘স্লো ট্রাভেল’ দারুণ কার্যকর। এছাড়া যারা বিদেশে পড়াশোনা বা গবেষণার কাজে যান তারাও এই ধারায় অনেক সুবিধা পান। অনেক ডিজিটাল নামডে বা ‘রিমোট ওয়ার্কার’ এখন এই পন্থায় বিশ্বভ্রমণ করছেন।
‘স্লো ট্রাভেলের’ খরচ কেমন?
সঠিক পরিকল্পনা থাকলে ‘স্লো ট্রাভেল’ খরচ বাঁচানোর সুযোগও করে দেয়। যেমন, হোটেলের বদলে হোমস্টে বা এয়ারবিএনবি বেছে নেওয়া যায়, যেখানে দীর্ঘ মেয়াদে ভাড়া কম পড়ে। স্থানীয় খাবার খেলে খরচও কমে, অভিজ্ঞতাও বাড়ে। হাঁটা বা রাইড শেয়ার ব্যবহার করে পরিবহনখরচও সাশ্রয় করা সম্ভব।