রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (পদমর্যাদাক্রম) সংক্রান্ত মামলায় রিভিউ আবেদনের রায় আজ ঘোষিত হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) আপিল বিভাগের এই রায় ঘোষণার কথা থাকলেও বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর মাতৃবিয়োগের কারণে রায় ঘোষণা স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি ছুটিতে রয়েছেন।
জানা গেছে, মামলাটির রায় দেওয়ার কথা ছিল বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের। এর আগে বুধবার (৬ আগস্ট) আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ রায়ের জন্য বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করেন।
উল্লেখ্য, আপিল বিভাগের আগের রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে গত ৩০ জুলাই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ৬ আগস্ট দিন নির্ধারণ করেছিল। পরে তা এক দিন পিছিয়ে ৭ আগস্ট করা হয়। এখন তা আরও পিছিয়ে যাচ্ছে।
রিভিউ শুনানিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার সালাহ উদ্দিন দোলন। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবির ও অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আহসানুল করিম এবং ব্যারিস্টার এম. আবদুল কাইয়ূম। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)।
১৯৮৬ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ‘রুলস অব বিজনেস’-এর আওতায় রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স জারি করে। পরে এতে একাধিকবার সংশোধন আনা হয়। তবে সংবিধান স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদকে প্রশাসন ক্যাডারের নিচে রাখার অভিযোগ তুলে ২০০৬ সালে হাইকোর্টে রিট করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।
২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আটটি নির্দেশনাসহ সংশোধিত ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে আপিল করে এবং ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় ঘোষণা করে।
সেই রায়ে আপিল বিভাগ তিনটি মূল নির্দেশনা দেয়: সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন হওয়ায় সাংবিধানিক পদে থাকা ব্যক্তিরাই অগ্রাধিকার পাবেন। জেলা ও সমমানের জজরা সচিবদের সমপর্যায়ের (১৬ নম্বর ক্রম) হবেন। অতিরিক্ত সচিবরা পরবর্তী (১৭ নম্বর) পদমর্যাদায় থাকবেন।
এই আপিল রায়ের বিরুদ্ধেই রিভিউ আবেদন করা হয়। রিভিউয়ে অংশ নেয় বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনসহ ডেপুটি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলগণ।