পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, তার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এই তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য এবং সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’। তিনি এখন বাংলাদেশে বিচারিক প্রক্রিয়ার মুখোমুখি।
এর আগে ১১ আগস্ট প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অপর তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছিল।
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ২৩ জনের বিরুদ্ধে ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। এর মধ্যে তিন মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ১১ আগস্ট (বিশেষ জজ আদালত-৫) এবং অন্য তিন মামলায় ১৩ আগস্ট (বিশেষ জজ আদালত-৪) ধার্য করা হয়।
শেখ হাসিনা পরিবারের বাইরে ১৬ জনও অভিযুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, গণপূর্তের তৎকালীন সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া, সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য কবির আল আসাদ, সদস্য তন্ময় দাস, সদস্য নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার।
দুদকের পিপি খান মো. মইনুল হোসেন বলেন, “রাজউকের নিয়ম অনুযায়ী, ঢাকায় জমি-বাড়ি-গাড়ি নেই এমন ব্যক্তি সংস্থার প্লট বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারেন। কিন্তু শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা মিথ্যা হলফনামা দিয়েছেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রত্যেকের নামে জমি, বাড়ি ও গাড়ি আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা ৬০ কাঠার প্লট নিয়েছেন, যা অপরাধ। সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।”
দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, ছয় মামলায় আদালতে হাজির হওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং পরে মামলাগুলো দুটি বিচারিক আদালতে বদলি করা হয়।
শেখ হাসিনা ও পরিবারের সদস্যদের নামে বরাদ্দকৃত প্লট বিষয়ে দুদক ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুসন্ধান শুরু করে। ছয়টি মামলায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় দুদক গত ১০ মার্চ, যেগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা হয়েছে।