ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

স্বাস্থ্য খাতে ‘দুর্নীতির হোতা’ মিঠু ৫ দিনের রিমান্ডে

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৫, ০১:৩৫ পিএম
মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু। ছবি- সংগৃহীত

স্বাস্থ্য খাতের আলোচিত ঠিকাদার ও দুর্নীতির অভিযোগে বহুল সমালোচিত মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. সাব্বির ফয়েজের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

দুদকের দায়ের করা মামলায় মিঠুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য খাতে মালামাল সরবরাহ, নির্মাণকাজ ও উন্নয়ন প্রকল্পে প্রভাব বিস্তার করে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন এবং অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার বিরুদ্ধে আমেরিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় অর্থ পাচারের অভিযোগও অনুসন্ধানাধীন।

এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে মিঠুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হস্তান্তর করা হয়। পরে দুদকের উপসহকারী পরিচালক জাকির হোসেন আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত মিঠুকে কারাগারে পাঠিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন।

এদিন রিমান্ড শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন আবেদন করেন। তবে দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদকের রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মিঠু অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ প্রায় ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে কৃষিজমি, প্লট, ফ্ল্যাট, বাড়ি নির্মাণে ১৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ, বিভিন্ন কোম্পানিতে শেয়ার বিনিয়োগ, ব্যাংক হিসাবে নগদ অর্থ, বিলাসবহুল গাড়ি, স্বর্ণালংকার ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রীসহ ৫৭ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মিঠুর মোট সম্পদ ও পারিবারিক ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় ১৪৭ কোটি টাকা হলেও বৈধ আয়ের উৎস পাওয়া গেছে মাত্র ৭১ কোটি ৪৯ লাখ টাকার। অর্থাৎ ৭৫ কোটি টাকারও বেশি সম্পদের উৎস বৈধ নয়। এ কারণে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত, অর্থপাচার ও দুর্নীতির সঠিক তথ্য উদঘাটনের জন্য তাকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।

মিঠু স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন ক্রয়, টেন্ডার ও সরবরাহ কার্যক্রমে একচেটিয়া দখল তৈরি করে ‘দুর্নীতির হোতা’ হিসেবে পরিচিতি পান। তার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য প্রকল্পে নিম্নমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং অতিরিক্ত দামে কেনাকাটার অভিযোগ রয়েছে। দুদক বলছে, এসব অভিযোগের সঠিক অনুসন্ধান শেষ করতে রিমান্ডে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ জরুরি।