নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে দ্বিতীয় দিনের মতো শুরু হয়েছে চূড়ান্ত আপিল শুনানি। বুধবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিট থেকে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ শুনানি শুরু হয়।
আদালতে মামলার বিষয়ে শুনানি শুরু করেন অ্যাডভোকেট ড. শরীফ ভুঁইয়া। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
এর আগে গতকাল আপিল শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে অ্যাডভোকেট ড. শরীফ ভুঁইয়া সংবিধান ব্যাখ্যা করার পদ্ধতি এবং সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে কীভাবে বিগত নির্বাচনের সময় দেশে সংকট তৈরি হয়েছিল, তা বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করেন।
গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য করা আবেদনের শুনানি শেষে আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল করেন।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি ও রুল প্রদানের পর হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট রিটটি খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে।
এই রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয় এবং ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারীরা আপিল দায়ের করেন। আপিল বিভাগে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে।
ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ অন্যান্য পরিবর্তন আনা হয় পঞ্চদশ সংশোধনী আইনে, যা ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশ করা হয়।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর রায় পুনর্বিবেচনার জন্য সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। অন্য চারজন হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া এবং জাহরা রহমান। এরপর ১৬ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এ ছাড়া গত বছরের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও একই আবেদন দাখিল করেন। পরে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন করেন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন