জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে প্রত্যাশা করছেন প্রসিকিউশন।
সোমবার (১০ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম।
প্রসিকিউটর বলেন, ‘এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসি হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আজ ১২ নম্বর সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আর ৩০ থেকে ৩৫ জনের জবানবন্দি নিয়েই আমরা সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করব। আমরা আশা করছি জানুয়ারি মাসের মধ্যে বিচার সম্পন্ন হবে।’
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ট্রাইব্যুনালে ১২ নম্বর সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আকিব রেজা খান। তিনিই আবু সাঈদকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানোর জন্য রিকশায় তুলে দিয়েছিলেন। এ ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে দায়ী করেন তিনি। একই সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা, এএসআই আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়সহ বেরোবির কয়েকজন শিক্ষক-কর্মচারীর নাম বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা-নীরবতা ও গাফিলতির কারণেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করেন এই সাক্ষী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে আজ এ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর আবদুস সোবহান তরফদার, মঈনুল করিম, সহিদুল ইসলামসহ অন্যরা।
এ মামলায় গ্রেপ্তার ছয় আসামি হলেন: এএসআই আমির হোসেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী, রাফিউল হাসান রাসেল ও আনোয়ার পারভেজ।
গত ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ৬ আগস্ট ৩০ আসামির বিরুদ্ধে ফর্মাল চার্জ (আনুষ্ঠানিক অভিযোগ) গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তবে, এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসিসহ ২৪ জন এখনো পলাতক রয়েছেন। তাদের পক্ষে গত ২২ জুলাই সরকারি খরচে চারজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।


