চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি কোম্পানির কাছে হস্তান্তর–সংক্রান্ত চুক্তির সব কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখতে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রিট মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চুক্তির কোনো প্রক্রিয়া এগোনো যাবে না বলেও জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) বিচারপতি ফাতেমা নজীবের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। শুনানির সময় রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে আশ্বস্ত করে জানায়, নতুন করে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
চুক্তি-নিয়ে বিতর্ক
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এনসিটি পরিচালনা চুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিট করেন। চলতি বছরের ৩০ জুলাই এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
রিটে বলা হয়, দেশীয় সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বন্দর পরিচালনা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দিলে নিরাপত্তা, অর্থনীতি ও কৌশলগত স্বার্থ সবই ঝুঁকিতে পড়তে পারে। আদালত এসব যুক্তি বিবেচনায় নিয়ে চুক্তি-প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে থামিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন।
রাষ্ট্রপক্ষের অবস্থান
বিচারিক স্থিতাবস্থা চাইলে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীরা জানান, গত ১৩ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে আশ্বাস দিয়েছিল- চূড়ান্ত শুনানি না হওয়া পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি হবে না। কিন্তু পরে চুক্তি-প্রক্রিয়ার মূল্যায়ন কমিটি গঠনের প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়টি আদালতে তুলে ধরা হলে বেঞ্চ অসন্তোষ প্রকাশ করে।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক আদালতকে জানান, পরবর্তী শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকার চুক্তি-সম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না।
পরবর্তী শুনানি ২৫ নভেম্বর
রুলের ওপর পরবর্তী শুনানি আগামী ২৫ নভেম্বর নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশে ততদিন পর্যন্ত এনসিটি সংক্রান্ত চুক্তির সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, চুক্তি-প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা আদালতের পূর্ববর্তী নির্দেশনার পরিপন্থী। হাইকোর্ট বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেছেন এবং পরিষ্কারভাবে বলেছেন, রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।

