আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতিমা তনির মামলায় আকাশ টিভির কথিত সাংবাদিক, ইউটিউবার আকাশ নিবিড়কে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সাইবার সুরক্ষা আইন লঙ্ঘন এবং চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে গত ২১ নভেম্বর আকাশসহ তিন জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় এ মামলা করেন তনি। বাকি দুই আসামি হলেন মহয়া খাতুন ওরফে মৌ সুলতানা এবং তানিয়া।
গতকাল বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে মগবাজারের মধুবাগ রোড থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার এসআই মো. এমদাদুল হক।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী শামীম মিয়া জামিন চেয়ে আবেদন করেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী জান্নাতুল ফেরদৌস জান্নাত জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় বলে প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই মোক্তার হোসেন জানান।
মামলায় বলা হয়, আসামিরা বেশ কিছুদিন ধরে তনি এবং তার পরিবারকে নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় ‘অশালীন, মিথ্যা, বিভ্রান্তিমূলক’ পোস্ট দিয়ে তার ‘সম্মানহানী’ করে আসছিল। গত ২১ জুন মৌ সুলতানার ফেইসবুক আইডি থেকে তনি ও তার পরিবারকে নিয়ে ‘অশ্লীল কথাবার্তা দিয়ে তৈরি’ একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়।
তনির স্বামী মৃত সাদাদ রহমানকে নিয়েও ‘অশ্লীল, মিথ্যা, বানোয়াট এবং বিভ্রান্তিকর’ ভিডিও তৈরি করে ফেইসবুকে পোস্ট করা হয়। এছাড়া আসামি আকাশ নিবিড় তার ইউটিউব চ্যানেলে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে’ ভিডিও পোস্ট করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
তনি এজাহারে বলেছেন, তিনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসব না করার অনুরোধ জানালে তারা তাতে কর্ণপাত না করে চাঁদা দাবি করে।
এ বিষয়ে তনী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘সাংবাদিকতার মতো মহান পেশার পরিচয় অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে, সাংবাদিকতার মুখোশ পরে আকাশ নিবিড় দীর্ঘদিন আমাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানি করছে। এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে সে আমার কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদাও দাবি করে।’
তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সে কোন সাংবাদিক না, স্রেফ সাংবাদিকতার পরিচয়কে কাজে লাগিয়ে চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইলিং করে বেড়ায়। তার মতো কিছু মানুষের জন্যই সাংবাদিকতা পেশা অনেক সময় বিব্রত হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই আইনের দ্বারস্থ হয়েছি এবং দেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। সে গ্রেফতার হয়েছে এবং বিচারক উভয় পক্ষের যুক্তি তর্ক শুনে তার জামিন আবেদন নাকচ করে, তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। আকাশ নিবিড়ের মতো অনেকেই আছে এই চক্রে। আমি বিশ্বাস করি যে, আইনের কাছে আমি ন্যায়বিচার পাবো।’
উল্লেখ্য, আলোচিত বর্ষা চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে এবং ডিভোর্স প্রসঙ্গে ইউটিউবার আকাশ নিবিড় আলোচনায় আসেন। বর্ষা চৌধুরী তার একাধিক ভিডিওতে দাবি করেন, আকাশ নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। একইসাথে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও আকাশ সে বিষয়ে মুখ খোলেননি।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন