রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০৯:১৫ এএম

বিবিসির প্রতিবেদন

হাসিনা প্রশ্নে অনড় ভারত

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১২, ২০২৫, ০৯:১৫ এএম

শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি- সংগৃহীত

শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি- সংগৃহীত

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনার অডিও ফাঁস কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। যত যাই হোক, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ভারতের অবস্থানে এখনো কোনো পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশের অনুরোধ মেনে তাকে বিচারের জন্য প্রত্যর্পণ করার যে কোনো সম্ভাবনা নেই, দিল্লিতে ওয়াকিবহাল মহল সেটাও এখনো জোর দিয়েই বলছেন।

শেখ হাসিনা নিজেও এই দুটি বিষয়ের কোনোটি নিয়েই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।

গত এগারো মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারতের আশ্রয়ে থাকাকালীন তিনি নিয়মিতই দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিচ্ছেন বা নানাভাবে ইন্টার‍্যাক্ট করছেন।

তবে এক তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনার প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশের অডিও ফাঁস করা হয়েছে, এক ফেসবুক পোস্টে সেটিকে ‘অপসাংবাদিকতার নির্লজ্জ নজির’ বলে দাবি করেছেন তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।

এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের যে শত শত নেতাকর্মী ভারতে অবস্থান করছেন, তাদেরও অনেকেই তাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খন্ডন করার চেষ্টায় সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।

তবে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইতোমধ্যেই এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট দিয়ে দাবি করেছেন, তার ভাষায় ‘রাষ্ট্রীয় অনুমোদনপ্রাপ্ত হত্যাকান্ডে’ শেখ হাসিনা যে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন, সেটা ‍সংবাদ মাধ্যম বিবিসির তদন্তে প্রমাণিত। এই পরিস্থিতিতে ভারত যে আর টালবাহানা না করে এবং শেখ হাসিনাকে আড়াল না করে তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।

তবে ভারত সরকারের নীতিনির্ধারক ও শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা একান্ত আলোচনায় পরিষ্কার বলছেন, এই দাবি মেনে নেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না– কারণ শেখ হাসিনাকে ‘যে পরিস্থিতিতে ও ভারতের যে নীতির ভিত্তিতে’ এ দেশে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাতে কোনো মৌলিক পরিবর্তন ঘটেনি।

তারা যুক্তি দিচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার যদি কোনো অডিও কেউ গোপনে রেকর্ড করে সেটা ফাঁসও করে দেয় ভারতের সেটা দেখার বিষয় নয়, আর তাকে এ দেশে আতিথেয়তা বা রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে সেই অডিওর কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না।

দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ অন্য অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেটা আদৌ কতটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হচ্ছে- তা নিয়েও ভারত সন্দিহান।

এই পরিস্থিতিতে সেই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চার্জ গঠিত হলেও ভারত যে সেটাকে গুরুত্ব দেবে না, সে ইঙ্গিতও পরিষ্কার। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিবৃতি দেয়নি, বা মন্তব্যও করেনি।

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যাতে বিচারের জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, সেই অনুরোধ জানিয়ে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার দিল্লিকে কূটনৈতিক চ্যানেলে একটি নোট ভার্বাল পাঠিয়েছিল গত ডিসেম্বর মাসেই। ভারত সেই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই, কিন্তু তার পর প্রায় সাত মাস হতে চললেও সে ব্যাপারে আর কোনো সাড়াশব্দ করেনি।

বাংলাদেশের ওই প্রত্যর্পণের অনুরোধকে ভারত যে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছে না, সেটাও আকারে ইঙ্গিতে একাধিকবার বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভারত সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেছিলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে ঠিকই, কিন্তু কোনো দেশ যদি মনে করে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হবেন, তাহলে প্রত্যর্পণের অনুরোধ নাকচ করার অধিকারও তাদের আছে।

তার যুক্তি ছিল, বাংলাদেশে যেভাবে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে হত্যা মামলা আনা হচ্ছে, অভিযুক্তদের আইনজীবীরা পর্যন্ত আদালতে হাজির হতে পারছেন না, কিংবা সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক বা দীপু মনির মতো সাবেক নেতা-মন্ত্রীদের আদালত প্রাঙ্গণেই শারীরিকভাবে হেনস্তা  করা হচ্ছে– তাতে এই বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে হাজারটা প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।

এখন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সেই ট্রাইব্যুনালে মানবতাবাদী অপরাধে আনুষ্ঠানিক চার্জ গঠন সম্পন্ন হলেও তাতে বিচার প্রক্রিয়ার গুণগত মানে কোনো পরিবর্তন হয়েছে– এমনটা ভারত মনে করছে না।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নতুন করে মানবতাবিরোধী অপরাধে সম্পৃক্ত থাকার যেসব অভিযোগ উঠেছে বা আদালতে যে চার্জশিট পেশ হয়েছে– তা নিয়ে ভারত অবশ্য প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা শেখ হাসিনার মুখপাত্র নই। তিনি যেসব বক্তব্য রাখেন তার সঙ্গে ভারত সরকারের যে কোনো সম্পর্ক নেই, সেটা অনেক আগেই আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি। শেখ হাসিনা ভারতের একজন অতিথি, কোনো রাজনৈতিক বন্দি নন, কাজেই ভারত তার মুখে লাগাম পরানোর কোনো প্রয়োজন বোধ করেনি কখনোই!

বস্তুত শেখ হাসিনা তার ‘প্ররোচনামূলক’ বক্তব্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভেতরে উসকানি সৃষ্টি করছেন, এই যুক্তিতে তাকে সংযত রাখার জন্য বাংলাদেশ সরকার বহুবার ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।

গত মাসেই লন্ডনের থিংকট্যাংক চ্যাথাম হাউসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস জানান, ‘আমি যখন ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদিকে এই কথা বলি, তিনি বললেন এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে আমরা কারো মুখ খোলা কীভাবে আটকাতে পারি!’

ফলে ভারতে থাকাকালীন শেখ হাসিনার কথা বলার অধিকার যে খর্ব করা হবে না এবং তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে ইন্টারঅ্যাকশন যথারীতি চালিয়ে যেতে পারবেন– এটা ভারতের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক নেতৃত্বের তরফেই পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!