পেঁয়াজের মৌসুম প্রায় শেষ, তবুও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না রাজশাহীর পুঠিয়াসহ আশপাশের এলাকার কৃষকেরা। উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে বিক্রয় মূল্যের সামঞ্জস্য না থাকায় বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।
স্থানীয় পেঁয়াজ চাষি মো. আব্দুল মজিদ জানান, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করতে খরচ হয় প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত। এতে কাঁচা পেঁয়াজ উৎপাদন করতে কেজিপ্রতি খরচ পড়ে ২৮-৩০ টাকা। অথচ বর্তমানে বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা দরে, এমনকি অনেক পাইকার এর চেয়েও কম দাম দিচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, মৌসুম শেষে ৪০ কেজি কাঁচা পেঁয়াজ শুকিয়ে বা পচে নেমে আসছে ২৫-২৮ কেজিতে। পাশাপাশি ৪২ কেজিকে এক মণ ধরা হচ্ছে, ফলে বর্তমানে ১৬০০-১৮০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেও কেজিপ্রতি ১০-১৫ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।
চাষি আব্দুল মমিন বলেন, ‘এই মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম। এ বছর তেমন ভালো ফলন হয়নি আবার দামও পাচ্ছি না। মৌসুমে কাচা পেঁয়াজ বিক্রি করেও খরচ উঠেনি। মৌসুমের শেষ সময়ে দাম ভালো হবে বলে আশা করেছিলাম কিন্তু দাম উঠল না। শুকনো পেঁয়াজ তারপরেও দাম কম এর ওপর আবার আড়ৎদাররা ওজনে ২ কেজি বেশি নিচ্ছেন। এই সময় এসে ২২০০-২৫০০ টাকা মণ দরে দাম থাকলেও কিছু লাভবান হতাম।
কৃষি সংশ্লিষ্টারা বলছেন, পেঁয়াজ আমদানি নিয়ন্ত্রণ না করা এবং বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাই এই সংকটের অন্যতম কারণ। সময়মতো পরিকল্পনা ও ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে কৃষকরা ভবিষ্যতে এই ফসল চাষে অনাগ্রহী হয়ে পড়বেন, যা দেশীয় কৃষি উৎপাদনের জন্য বড় হুমকি।
চাষিদের দাবি, সরকার যদি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ সংগ্রহ করে বা ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে, তাহলে এই লোকসান কিছুটা হলেও এড়ানো সম্ভব হবে। অন্যথায় আগামীতে পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারেন অনেকেই।
এ বিষয়ে রাজশাহীর কৃষি উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, বর্তমানে যে দাম আছে এতে খুব একটা কম না। আমাদের অঞ্চলে উৎপাদন বেশি যার কারণে দাম একটু কম। পেঁয়াজ পচনশীল সেই হিসাবে আরেকটু দাম থাকলে কৃষক বেশি লাভবান হতো। বর্তমানে আমরা পেঁয়াজ সংরক্ষণের জন্য ইয়ার ফ্লো মেশিন দিয়ে একটি ঘর তৈরি করে দিয়েছি। এ পদ্ধতি পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখলে পেঁয়াজের ওজন ও পচন অনেক কম হয়।
আপনার মতামত লিখুন :