বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বোরি) সংস্কারের লক্ষ্যে নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফি ও ওশনোগ্রাফি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা কমডোর এম মিনারুল হককে মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ দেয়। সোমবার (৭ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই নিয়োগ দেন।
এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন ড. তৌহিদা রশীদ। মহাপরিচালক হিসেবে গত কয়েক বছরে যারাই দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের কেউই সরাসরি ওশানোগ্রাফিতে অভিজ্ঞ ছিলেন না। বরং এই পদে নিয়োগ পেয়ে বিভিন্ন প্রজেক্ট, ঠিকাদার নির্বাচনে দলীয়করণ এবং অন্যান্য গবেষণা কাজে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত সরকারের সুবিধাভোগী কিছু ব্যক্তি বর্তমান মহাপরিচালক নিয়োগে অসন্তুষ্ট হয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে।
সমুদ্র ও সমুদ্র সম্পদের সুরক্ষা এবং সমুদ্র জরিপ ও গবেষণায় নৌবাহিনী পথিকৃৎ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা বিধানের সাথে সাথে সমুদ্র গবেষণায় গুরুত্বারোপ করে ১৯৮৩ সাল থেকে হাইড্রোগ্রাফি বিভাগ এবং পরবর্তীতে ব্লু ইকোনমি সেল সংযোজন করে নৌবাহিনী।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী হাইড্রোগাফিক এন্ড ওশনোগ্রাফিক সেন্টারের (বিএনএইচওসি) অধীনে পরিচালিত সমুদ্র বিজ্ঞান গবেষণা ও হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে কার্যক্রমের মান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে। তাদের তৈরীকৃত পেপার ও ডিজিটাল নেভিগেশনাল চার্ট ব্রিটিশ এ্যাডমিরালটি কর্তৃক স্বীকৃত যা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য সামুদ্রিক জাহাজ ব্যবহার করছে। সমুদ্র অর্থনীতি বাস্তবায়ন এবং পানির গভীরতা পর্যবেক্ষণসহ সমুদ্র তলদেশের নানা প্রতিবন্ধকতা সনাক্ত করে সকল জাহাজ চলাচলালের লক্ষ্যে নিরাপদ সমুদ্র পথ বজায় রাখতে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে নৌবাহিনী। সেই সাথে তাদের ৫টি রিসার্চ শিপ ও কিছু বিশেষায়িত সার্ভে বোট সমুদ্র গবেষণায় ইতোমধ্যে সাফল্য দেখিয়েছে।
নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত মহাপরিচালক কমডোর মিনারুল হক সরাসরি ওশনোগ্রাফি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। নেভাল হাইড্রোগ্রাফি স্কুল, গোয়া, ভারত থেকে আইএইচও হাইড্রোগ্রাফি কোর্স এবং গোয়া ইউনিভার্সিটি হতে হাইড্রোগ্রাফিতে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন।
এছাড়াও ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওশোনোগ্রাফি হতে ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। তিনি বর্তমানে ওশনোগ্রাফি নিয়ে একজন পিএইচডি ফেলোশিপে গবেষণারত। এছাড়া বেসিক ও লং হাইড্রোগ্রাফিক কোর্সেও ওশানোগ্রাফি বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ইতোপূর্বে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে ডাইরেক্টর অব হাইড্রোগ্রাফি, ডাইরেক্টর অব-ব্লু-ইকোনমি এবং নৌবাহিনীর হাইড্রোগ্রাফিক ও ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ সেন্টারের অধিনায়ক হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব মেরিটাইম রিসার্চ এন্ড ডেভলপমেন্ট (বিমরাড) এর মহাপরিচালক, মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির আর্থ ও ওশান সাইন্স ফ্যাকাল্টির ডিন এবং ওশানোগ্রাফি বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন
আপনার মতামত লিখুন :