ঢাকা শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

চা-বাগান দেখতে টিকিট কাটতে হবে: শ্রম উপদেষ্টা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
চা-বাগানের শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে শ্রম উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনের মতবিনিময় সভা। ছবি- সংগৃহীত

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে ফুলের বাগান দেখতেও টিকিট লাগে। আমাদের দেশের চা-বাগানগুলোতে পর্যটকদের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করা দরকার। পর্যটকেরা দামি রিসোর্টে অনেক টাকা দিয়ে থাকতে পারলে সামান্য ২০ টাকা টিকিট খরচ করতে তাদের তেমন ক্ষতি হবে না। এসব টিকিটের টাকা শ্রমিকদের কল্যাণে কাজে লাগানো যাবে।’

শনিবার (১৭ মে) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সভাকক্ষে চা-বাগানের শ্রমিক ও ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন এম সাখাওয়াত হোসেন।

মতবিনিময় সভায় শ্রমিক নেতারা বলেন, আমাদের চা–শ্রমিকরা অনেক কম মজুরিতে কাজ করে। এই মজুরি দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। স্থায়ী শ্রমিকেরা রেশন পেলেও অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্য এসব সুবিধা পান না। অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ীকরণেও নানা বাধাবিপত্তি আছে।

নেতারা বলেন, আমাদের দেশে চা-শ্রমিকদের বসবাস ২০০ বছরেরও অধিক। চা-শ্রমিকেরা একই বসতভিটায় বংশানুক্রমে বসবাস করে এলেও ভূমির অধিকার পাচ্ছেন না। সব চা-বাগানে এখনো সরকারি স্কুল নেই। চা-অধ্যুষিত এলাকায় চা-শ্রমিক সন্তানদের জন্য কর্মসংস্থান ও মেধা বিকাশের লক্ষ্যে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিদ্যালয় স্থাপন অতি আবশ্যক।

মতবিনিময় সভায় চা-বাগানগুলোর শ্রমিকদের চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত করা, নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়ানো, চট্টগ্রাম ভ্যালিতে শ্রমকল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা এবং চা-শ্রমিকদের বিলুপ্তপ্রায় সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে ‘চা-জনগোষ্ঠী শিল্পকলা একাডেমি’ স্থাপনের দাবি জানান।

শ্রমিকের চা-বাগান প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘ ৯ মাস ধরে বন্ধ রাখার বিষয়টি নিয়ে তারা বলেন, ফুলতলা টি কোম্পানি লিমিটেডের ফুলতলা চা-বাগান দীর্ঘ ৯ মাস ধরে বন্ধ। এসব বাগানের শ্রমিকদের কারো অনাহারে কারো অর্ধাহারে জীবন কাটছে। তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ও সার্বিক সুবিধা ব্যাহত হচ্ছে। এমন অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে চা-বাগান চালু করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

এ সময় শ্রমিক নেতাদের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আপনারা চা-শ্রমিকেরা যা বললেন, এগুলো দাবি বলাও ঠিক না, এগুলো আপনাদের অধিকার। আমরা অতি শিগগিরই চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচনের ব্যবস্থা করছি। পাশাপাশি যতগুলো সমস্যা আছে, সেগুলোর জন্য আমরা কাজ করব।’