দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দ্রুত ঘটতে থাকা ঘটনার মধ্যে সর্বশেষ সংযোজন- অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন। বিষয়টি এখন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, ইউনূসের পদত্যাগের সম্ভাবনার খবর পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন।
এদিকে, একইদিন সন্ধ্যায় বিএনপি এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টাকে ‘বিতর্কিত’ আখ্যা দিয়ে তাদের অপসারণের দাবি তোলে। এর আগে ঢাকায় বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা। তাদের দাবি-তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। তাদের অব্যাহতি প্রদান এখন সময়ের দাবি।
অন্যদিকে, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে বিভাজন মিটিয়ে ঐক্য ফিরিয়ে আনা জরুরি।
তিনি হুঁশিয়ার করেন, যদি ঐক্য হারিয়ে যায়, তাহলে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটতে পারে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদসহ পাঁচটি দলের বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিয়ে আলোচনা হয়। জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান প্রধান উপদেষ্টার প্রতি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও উত্তপ্ত প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ লিখেছেন, বিএএল, নর্থ ও দিল্লি জোটভুক্ত হয়ে কুমির ডেকে আনছেন, তা আপনাদেরকেই খাবে।
তিনি আফসোস প্রকাশ করে বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর ও মানুষের ভাগ্য আর ইতিবাচক পথে যাবে না।
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার আগের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিভাজনমূলক বক্তব্য ও তকমাবাজি পরিহার করতে হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানে ঐক্যবদ্ধ থাকা জনগণের সামনে দীর্ঘ পরীক্ষা রয়েছে বলেও লিখেছেন মি. আলম, ‘এ পরীক্ষা ঐক্যের এবং ধৈর্যের। এ পরীক্ষা উতরে যেতেই হবে’ লিখেছেন এই উপদেষ্টা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে গুঞ্জন সত্য হলে দেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসনে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। একই সঙ্গে এটি রাজনৈতিক সমঝোতা ও নতুন সংকট-উভয়ের সূচনা ঘটাতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :