আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণায় ডর্প স্বাগত জানিয়েছে। তবে বাজেটের ন্যায়সংগত বণ্টন ও স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের অংশগ্রহণমূলক বাস্তবায়ন নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
সোমবার (২ জুন) অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উত্থাপন করেন।
ডর্পের পক্ষে বলা হয়, ‘বিশেষত হাওর ও উপকূলীয় অঞ্চলে কাজ করতে গিয়ে আমরা দেখেছি, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের পানি ও স্যানিটেশন বিষয়ক স্থায়ী কমিটিগুলো (স্ট্যান্ডিং কমিটি) প্রায় নিষ্ক্রিয়। স্থানীয় জনগণ এসব কমিটির অস্তিত্ব সম্পর্কেও সচেতন নয়। অথচ বাজেট বাস্তবায়নের সফলতা নির্ভর করে এসব কমিটির সক্রিয়তা, জনসম্পৃক্ততা এবং পরিকল্পনার ওপর।’
২০২৫-২৬ বাজেট বক্তৃতায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও, বর্তমানে ৯-১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। এই বাস্তবতায় পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় কম হয়েছে বলে মনে করছে ডর্প। বিশেষ করে যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে উপকূলীয় অঞ্চলে পানির সংকট তীব্রতর হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ইতিবাচক পদক্ষেপ হলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় চাহিদা ও স্থানীয় সরকারের অংশগ্রহণ কতটা গুরুত্ব পাবে, সেটিই নির্ধারণ করবে এর কার্যকারিতা।
ডর্প মনে করে, এই বাজেটে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা (৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা) এবং বাজেট ঘাটতি (২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা) নির্ধারণের পাশাপাশি, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার কোন সুস্পষ্ট রূপরেখা নেই। অথচ মাঠপর্যায়ে কার্যকর বাজেট বাস্তবায়নের জন্য ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং উপজেলা পর্যায়ের সুশাসন ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘স্থানীয় সরকার ও পানি-স্যানিটেশন’ বিষয়ক একটি গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক বাজেট প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি’। বাজেট প্রণয়নের সময় ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে না পারলে, প্রকৃত অর্থে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রয়োজনীয়তা বাজেটে প্রতিফলিত হবে না।
ডর্প আশা করে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে স্থানীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং এই বাজেটের মধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক খাতে সংস্কার আসবে বৈষম্য কমবে।