মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম

গুমে জড়িত ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা: গুম কমিশনের প্রতিবেদন

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম

ধরে এনে করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ। প্রতীকী ছবি

ধরে এনে করা হচ্ছে জিজ্ঞাসাবাদ। প্রতীকী ছবি

আন্তরাষ্ট্রীয় গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গুম হওয়া ব্যক্তিদের আদান-প্রদান করা হতো।

গুম কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ৪ জুন এই প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেন কমিশন।

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অনেক নাগরিককে গুম করে অবৈধভাবে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হতো, আবার ভারত থেকেও অনেককে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হতো- পাঠিয়ে দেওয়া হতো।

দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের চাওয়া ও প্রয়োজন অনুযায়ী গুম করে অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে আদান-প্রদান করা হতো। এই কর্মকাণ্ডকে কমিশন  ‘আন্তরাষ্ট্রীয় গুমপ্রক্রিয়া’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

প্রতিবেদনে অন্তত পাঁচজন গুম হওয়া ভুক্তভোগী ব্যক্তির জবানবন্দি নিয়েছে কমিশন। যারা গুমের পর ভারতে পাচার ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সন্দেহভাজন এক ব্যক্তি প্রথমে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের হাতে আটক হন। পরে বাংলাদেশের ডিজিএফআই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাছে প্রস্তাব পাঠায়, যাতে আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কোনো আদালতের অনুমতি বা নথিভুক্ত মামলার ভিত্তি ছাড়াই বিচারবহির্ভূতভাবে এই পুরো প্রক্রিয়া হয়। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার নামে এসব কর্মকাণ্ড পরিচালিত হলেও ব্যক্তি-অধিকার ও মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে।

একাধিক ঘটনায় দেখা গেছে, ভারত থেকে ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের আবার ডিজিএফআই ও র‍্যাবের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করা হয়েছে। কাউকে কাউকে আবারও নিখোঁজ করে ফেলা হয়েছে, যার কোনো খোঁজ পরিবারের কাছে নেই।

ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার চাওয়া অনুযায়ী আবার অনেককে গুম করে ভারতে পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।

প্রতিবেদনে বেশ কয়েকজন বন্দির অভিজ্ঞতাও তুলে ধরা হয়। যেখানে একজন বলেন, ‘আমাকে চোখ বেঁধে ভারতের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আবার বাংলাদেশে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আমাকে বলা হয়, ‘তুমি মরো, তুমি বাঁচো, আমরা ঠিক করব।’

আরেক বন্দিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাঠিয়ে সেখানে ভারতীয় মুসলমানদের বিষয়ে ভিডিও কনটেন্ট তৈরির অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে তাকে ফিরিয়ে এনে র‍্যাবের হেফাজতে রাখা হয়।

গুম ও নির্যাতনের শিকার এসব ব্যক্তির নিরাপত্তার স্বার্থে নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি কমিশন।

তারা জানিয়েছে, এসব কর্মকাণ্ডে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে মৌখিক সমঝোতা থাকলেও কোনো লিখিত চুক্তি বা আইনি কাঠামো নেই। ফলে এসব বন্দির পরিবার আইনি প্রতিকার তো দূরের কথা, খোঁজখবরও পায় না।

কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ধরনের সমন্বয় আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন। এতে ব্যক্তির স্বাধীনতা, আইনি নিরাপত্তা ও বিচারপ্রাপ্তির অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়।

১৯ জুন রাজধানীর গুলশানে একটি সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত কমিশনের সভাপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা গুমের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাদের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। কারণ সেটি আমাদের জুরিসডিকশনের বাইরে। তবে বাংলাদেশে যাদের সম্পৃক্ততা পাচ্ছি, তাদের বিষয়ে মামলা করার জন্য পুলিশকে চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও ৫-৬টি মামলার কার্যক্রম চলছে।’

মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এসব গুমের পেছনে শুধু দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা অজুহাতও ব্যবহৃত হচ্ছে। অথচ কোনো সন্দেহভাজনকেও বিনা বিচারে দীর্ঘদিন অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখার অধিকার রাষ্ট্রের নেই।

প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়েছে, এই প্রক্রিয়াগুলোকে আইনের আওতায় আনতে হবে, গোপন হেফাজতে থাকা সব ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং যৌথ গোয়েন্দা কার্যক্রমের জন্য একটি স্বচ্ছ ও জনসম্মুখ চুক্তি করতে হবে।

কিছু কিছু গুমের ঘটনা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি তদারকি করতেন বলেও জানিয়েছে কমিশন। মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে গুমের ঘটনাটি শেখ হাসিনা জানতেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

Link copied!