মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০১:২১ পিএম

ঝুলছিল পোড়া হাত, নিচে পড়ে ছিল নিথর দেহ

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ২২, ২০২৫, ০১:২১ পিএম

বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উদ্ধারকাজে অংশ নেন শিক্ষার্থী মাহাথির মোহাম্মদ আদিব। ছবি- সংগৃহীত

বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর উদ্ধারকাজে অংশ নেন শিক্ষার্থী মাহাথির মোহাম্মদ আদিব। ছবি- সংগৃহীত

জানালার পাশে ঝুলছিল পোড়া হাত, শ্রেণিকক্ষে পড়ে ছিল নিথর দেহ। যারা বেঁচে ছিল তীব্র যন্ত্রণায় তাদের কোনো চেতনাই ছিল না। কারো আবার পুড়ছিল পুরো শরীর।

উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে সোমবার (২১ জুলাই) বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর এমনই দৃশ্য দেখেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী মাহাথির মোহাম্মদ আদিব।

দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধারকাজে অংশ নিয়ে নিজের হাত পুড়িয়ে ফেলেন আদিব। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ব্যান্ডেজ হাতে স্কুলে এসে  ওই বিভীষিকাময় দৃশ্যের বর্ণনা করেন।

গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আদিব বলেন, ‘বিকট শব্দ করে প্লেনটি ভবনে আঘাত হানে। সঙ্গে সঙ্গেই বিস্ফোরণ হয়, এরপর একাধিক ট্যাংক থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তখন আমি ক্যান্টিনের পাশে ছিলাম, খাবার আনছিলাম। ধ্বংসস্তূপ আর আগুনের মাঝখান দিয়ে উদ্ধার শুরু করি ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে। আমার হাতও কিছুটা পুড়ে গেছে।’

উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে আদিব বলেন, ‘শিশুদের দেহ বেঞ্চের ওপর আটকে গিয়েছিল, সহজে ওঠানো যাচ্ছিল না। যারা বেঁচে ছিল, তারা চেতনা হারিয়ে একদিকে তাকিয়ে পুড়ছিল। জানালার পাশে যারা ছিল, তাদের পোড়া হাতগুলো জানালা দিয়ে ঝুলছিল। জানালার প্রতিটি ফ্রেমেই একটা করে পোড়া হাত লেগে ছিল। নিচে পড়ে থাকা দেহগুলো ছিল ছাইয়ের মতো। পুরো ভবনে কোথাও রক্ত দেখা যায়নি, শুধু পোড়া দেহ।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকি, ফায়ার সার্ভিস পানি দিয়ে আগুন নেভাতে থাকেন। আমরা পোড়া শিশুদের টেনে বের করি। ছয়জনকে বের করতে পেরেছিলাম, তবে তাদের মধ্যে দুজনেরই বাঁচার আশা ছিল। বাকি চারজনের শরীর ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে গিয়েছিল। কারও চামড়া ছিল না, মাথার চুল পর্যন্ত পুড়ে গেছে।’

এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন আদিব। বলেন, ‘চোখে আর পানি আসে না, কাল সারাদিন কেঁদেছি। যা দেখেছি, তা কোনোদিন ভুলতে পারব না।’

বিমান প্রশিক্ষণের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়, তাও আবার একটি স্কুল-কলেজের মাথার ওপর দিয়ে প্রশিক্ষণ বিমান ওড়ানো একদমই উচিত না। যদি মাত্র ১০ মিনিট আগে ক্লাস শেষ না হতো, তাহলে ৪০০ শিক্ষার্থীর তাৎক্ষণিক মৃত্যু হতো।’

এদিকে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৭৮ জন, যাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট।

মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘২০ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন শিশুর শরীরের বড় অংশ দগ্ধ হয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি, তবে অনেকেই এখনো সংকটাপন্ন।’

Shera Lather
Link copied!