সম্প্রতি আলজাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট দাবি করেছে, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান দমনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গোপনে রেকর্ড করা একাধিক ফোনালাপ তাদের হাতে এসেছে। তাদের তদন্তে এও উঠে এসেছে যে, রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাঁচবার পরিবর্তন করা হয়েছিল।
আলজাজিরার ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট নতুন গোপন কল রেকর্ড প্রকাশও করেছে। যেখানে শেখ হাসিনা নিজেই ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর ‘ওপেন অর্ডার’ দেওয়ার কথা বলেছেন। রেকর্ডিংয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর ‘হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর’ নির্দেশও রয়েছে।
প্রামাণ্যচিত্রটিতে ২০২৪ সালের ওই আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ মহলের ভেতরের আলোচনা, সিদ্ধান্ত ও দমননীতির বিস্তৃত বিবরণও তুলে ধরা হয়েছে।
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ড: ৫ বার বদলানো হয় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সরকারের ভেতরে চলে এক নাটকীয় ঘটনা। এ বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্রে দাবি করা হয়, সরকার হুমকি ও ঘুষের মাধ্যমে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। তদন্তে জানা গেছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি পাঁচবার পরিবর্তন করা হয়েছে। পরিবর্তন করে গুলির কোনো উল্লেখ মুছে ফেলা হয়। সে সময়ে শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ফোনে আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট সংগ্রহে তৎপর ছিলেন।
পরে ছড়িয়ে পড়া ক্ষোভের মুখে ঘটনাটি সামাল দিতে- আতঙ্কে থাকা আবু সাঈদের পরিবারকে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করানো হয়।
অবশ্য গত ৩১ অক্টোবর রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. রাজিবুল ইসলাম বলেছিলেন, আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাল্টাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে ভীষণ চাপ দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, পুলিশের চাপে রিপোর্ট ছয়বার পরিবর্তন করার পরেও তাদের মনমতো হয়নি। আমাকে ঢাকা থেকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়, তুমি সরকারি চাকরি করে কীভাবে সরকারের বিপক্ষে এই রিপোর্ট দিতে পারো।
তিনি আরও বলেন, চূড়ান্ত প্রতিবেদন যখন দিতে যাই, তার আগে ছয়বার প্রতিবেদন পরিবর্তন করানো হয়েছিল। সে সময় রংপুর মেডিকেলের ভাইস প্রিন্সিপাল মাহফুজার রহমান চার্জে ছিলেন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতারা ছিলেন। পুলিশ প্রশাসনের লোকও ছিলেন।