ঢাকা শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫

গোপালগঞ্জের ঘটনায় ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৬, ২০২৫, ১২:০০ পিএম
গোপালগঞ্জের সহিংসতা। ছবি- সংগৃহীত

গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনাগুলোর তদন্তে সরকার ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিশন গঠন করেছে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি ড. মো. আবু তারিককে সভাপতি করে এই কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

কমিশনের অন্যান্য সদস্যরা হলেন- জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব খন্দকার মো. মাহাবুবুর রহমান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম, ২১ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহীদুর রহমান ওসমানী, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালের পরিচালক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক সরদার নূরুল আমিন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী।

সরকারি তথ্য বিবরণীতে বলা হয়েছে, তদন্ত কমিশনের কার্যপরিধিতে থাকবে- ঘটনার অন্তর্নিহিত কারণ নির্ধারণ, দায়ী ব্যক্তি বা সংগঠনকে চিহ্নিত করা, আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ প্রদান এবং জেলা কারাগারসহ সরকারি স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা ও নাগরিক নিরাপত্তা ব্যাহত হওয়ার ঘটনাগুলোর বিশ্লেষণ। এ ছাড়াও, ভবিষ্যতে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ প্রদান করবে কমিশন।

এই কমিশন প্রয়োজনে যেকোনো ব্যক্তিকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ কমিশনকে সাচিবিক সহায়তাসহ প্রযোজ্য সব ধরনের সহায়তা ও ব্যয় নির্বাহ করবে। কমিশনের কাজে সহায়তার জন্য প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া যাবে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, কমিশনকে গঠনের তারিখ থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন, সুপারিশসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে দাখিল করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জ জেলা সদরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতা, হামলা, ভাঙচুর ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

ঘটনার পর জেলা কারাগারসহ বিভিন্ন সরকারি স্থাপনাতেও হামলার অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে তদন্ত ও দোষীদের শনাক্তে ‘দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট ১৯৫৬’-এর সেকশন ৩ অনুযায়ী তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার।

এদিকে ওই সহিংস ঘটনার পর পুলিশ পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী থানার রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নাসির উদ্দিন সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা করেন।

মামলায় ৮৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরই মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

কাশিয়ানী থানার ওসি মো. কামাল হোসেন জানান, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানীর ফুকরা এলাকায় গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে। সেই মামলায়ও একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, ১৬ থেকে ২৬ জুলাই শুক্রবার পর্যন্ত এই ঘটনায় মোট ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় মোট ১০ হাজার ১৮৩ জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৩২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।