ঢাকা বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

জুলাই আন্দোলন নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন সাবেক আইজিপি 

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম
সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। ছবি- সংগৃহীত

জুলাইয়ের ছাত্র আন্দোলন দমন নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

আদালতে জমা দেওয়া তার ১৪ পাতার লিখিত জবানবন্দিতে উঠে এসেছে আন্দোলনকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে লেথাল অস্ত্র ব্যবহারের প্রস্তুতি, সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে গোপন কোর কমিটি গঠন, হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখাসহ আন্দোলনকারীদের নজরদারি ও নির্যাতনের বিশদ পরিকল্পনা। 

এই জবানবন্দি আন্দোলন দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রশ্ন নতুন করে সামনে এনেছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) একটি আদালতে দেওয়া তার জবানবন্দির নথিপত্র থেকে এসব তথ্য উঠে আসে।

জবানবন্দিতে সাবেক আইজিপি বলেন, ‘২০২৪ সালের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ধানমন্ডির বাসায় বৈঠক হতো। সেখানে স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন সচিব, এনটিএমসির জিয়াউল আহসান, র‍্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক, ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, এসবিপ্রধান মনিরুল ইসলামসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকতেন।’

তিনি আরও জানান, আন্দোলনের শীর্ষ ছয় সমন্বয়ককে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে এনে মানসিক চাপে রাখা হয় এবং তাদের মাধ্যমে আন্দোলন প্রত্যাহারের বিবৃতি দিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। তার ভাষায়, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হারুনকে সবসময় ‘জনাব’ বলে সম্বোধন করতেন। কারণ তাকে রাজনৈতিক নির্দেশনা বাস্তবায়নের সবচেয়ে উপযোগী মনে করা হতো।’

হেলিকপ্টার থেকে গুলির পরিকল্পনার বিষয়েও তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারীদের নজরদারির জন্য হেলিকপ্টার মোতায়েন ও গুলি চালিয়ে ভয় সৃষ্টির পরিকল্পনা আসে র‍্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক হারুন অর রশীদের পক্ষ থেকে। এটি ছিল একটি সরাসরি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।’

মামুন জানান, ‘ব্লক রেইড ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি এসেছিল প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই লেথাল উইপন ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা আমাকে জানান। তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ডিবির হারুন অর রশীদ লেথাল উইপন ব্যবহারে অতিউৎসাহী ছিলেন।’

সাবেক আইজিপির জবানবন্দিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ একাধিক শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা মারণাস্ত্র ব্যবহারের জন্য উৎসাহ ও পরামর্শ দিয়েছিলেন।