আগামী ২৩ আগস্ট ঢাকা সফর করবেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক হবে।
ক্যালেন্ডারের হিসাব অনুযায়ী সফরটি দু’দিনের হলেও কার্যত তিনি ২৪ ঘণ্টার চেয়ে একটু বেশি সময় ঢাকায় অবস্থান করবেন।
উভয় পক্ষের বৈঠকে দুই দেশের কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসামুক্ত ভ্রমণবিষয়ক তাৎপর্যপূর্ণ সমঝোতা সই হবে। তা ছাড়া বেশকিছু চুক্তি হওয়ারও প্রস্তাব রয়েছে।
৪ দফা পরিবর্তনের পর নতুন এ তারিখ নির্ধারিত হলো। প্রস্তাবিত সূচি মতে, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৩ আগস্ট তারা বাংলাদেশ সফর করবেন। দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
তাদের দাবি- একটি সফর নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে এতটা নাটক হয়নি। যদিও ১৩ বছর বাংলাদেশ-পাকিস্তান উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময় বন্ধ ছিল। তার আগে হয়েছে টুকটাক।
কিন্তু পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি অর্থাৎ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বাস্তবের চেয়ে বেশি প্রদর্শনের চেষ্টা হচ্ছে! যদিও বাইরের প্রচণ্ড সমালোচনা সত্ত্বেও সেগুনবাগিচা আরও ৮-১০টি দেশের মতো দক্ষিণ এশিয়ার ওই দেশের সঙ্গে সম্পর্কটা অস্বাভাবিক পর্যায় থেকে ‘স্বাভাবিক’ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইছেন।
কোনো অবস্থাতেই সরকারিভাবে প্রদর্শনেচ্ছাকে প্রশ্রয় না দেওয়ার পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ প্রস্তাবনা মতে, গত ২৭ এপ্রিল ইসহাক দারের ঢাকা আসার কথা ছিল। ভারতের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা চরমে উঠার পরিপ্রেক্ষিতে শেষ মুহূর্তে এতে সফরটি স্থগিত করা হয়।
স্মরণ করা যায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ইসহাক দারের সফর না হলেও গত ১০ মাসে নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে কমপক্ষে চার দফা বৈঠক হয়েছে। চলতি মাসে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি বাংলাদেশ সফর করেছেন। গত এপ্রিলে বাংলাদেশ সফর করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ। সে সময় দুই দেশের মধ্যে ১৫ বছর স্থগিত থাকা পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক ফরেন অফিস কনসালটেশন বা এফওসি অনুষ্ঠিত হয়। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ওই বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, আকাশপথে সংযুক্তি, প্রতিরক্ষা, কৃষি খাতে সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব পায়।
শীর্ষ বৈঠকও হয়েছে এরমধ্যে: ওদিকে গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে এবং ডিসেম্বরে কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক হয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের। সেখানে অন্যান্য আলোচনার মধ্যে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর মীমাংসা চেয়েছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বরাতে বলা হয়- অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, ‘বিষয়গুলো বারবার আসছে। আসুন, আমরা সামনে এগিয়ে যেতে সেই বিষয়গুলোর ফয়সালা করি।’ তিনি বলেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বিষয়গুলো চিরতরে সুরাহা করে ফেলা ভালো হবে।