সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম

রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশেষ সম্মেলন আগস্টে

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে আগামী ২৫ আগস্ট কক্সবাজারে একটি বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে। সেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, জাতিসংঘ প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেবেন। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অর্থবিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, খোদ জাতিসংঘ মহাসচিব রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে শরণার্থীদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের ঘোষণা দেওয়ার পাঁচ মাস পরও এ আলোচনার কোনো অগ্রগতি হয়নি। এ জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও ইতিবাচক কোনো সাড়া মেলেনি।

উল্টো এই পাঁচ মাসে আরও বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা নাগরিককে বলপূর্বক বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। আবার এ কাজের জন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবেও চাপ প্রয়োগ করা সম্ভব হয়নি। ফলে এই প্রক্রিয়া এখন ঝুলে গেছে।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে রোহিঙ্গা, আন্তর্জাতিক শরণার্থী ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীবিষয়ক বিশেষ অধিবেশন আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের পক্ষে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুটি জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর (প্রত্যাবাসন) প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে গত মার্চের ১৪ তারিখ কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। সে সময় তিনি জানান, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। সেই সঙ্গে ক্যাম্পে আরও ভালো পরিবেশ চায় এই শরণার্থীরা। এ দুটি বার্তা তিনি বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার জন্য মিয়ানমারসহ সংশ্লিষ্ট দেশ ও সংস্থাগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করারও আহ্বান জানান। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দেন।

সে সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, খুব দ্রুতই শুরু হবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। এ জন্য মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগও করা হয়। কিন্তু এর পর প্রায় পাঁচ মাস কেটে গেলেও এ প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মিয়ানমার সরকার এ বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করছে না। উল্টো গত কয়েক মাসে তারা আরও বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা নাগরিককে বলপূর্বক বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিয়েছে।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রোহিঙ্গা সংকটের আশু কোনো সমাধান তো দেখাই যাচ্ছে না। বরং এ খাতে সরকারের ব্যয়ের বোঝা বাড়ছে। ব্যয় সামলাতে না পেরে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও বিশ্বব্যাংককে সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। অবশ্য বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে উল্টো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরির কাজও শুরু করেছে।

এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের (জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক) প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ বাড়াতে হবে। আমরা সে চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখানে আন্তর্জাতিক মহলের সমর্থন খুবই জরুরি। কিন্তু সেই কাঙ্ক্ষিত সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি না।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখ জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডির ঢাকা সফরের সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তার অফিস কক্ষে সাক্ষাৎ করেন ফিলিপ্পো। সে সময় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গাদের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমস্যা, বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইউএস-এইড এর আর্থিক সহায়তা বন্ধের ফলে উদ্ভূত সমস্যা মোকাবিলা, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পুনর্বাসনসহ সামগ্রিক বিষয়ে বিশ্ববাসীর সহযোগিতার কথা জানানো হয়।

সে সময় ফিলিপ্পো বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসাও করেন রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়ার জন্য এবং সে সময় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাসও দেন। এরপরও পাঁচ মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও তার দেওয়া আশ্বাসের প্রতিফলন দেখা যায়নি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিষয়ে জানতে চাইলে রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো অগ্রগতি হয়নি। আমরা মিয়ানমারসহ সংশ্লিষ্ট সব দেশ ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। এজন্য মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করা হচ্ছে। 

তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র জানায়, জাতিসংঘ মহাসচিবের বাংলাদেশ সফরের সময় বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মানবিক করিডর স্থাপন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। তখন অভ্যন্তরীণভাবে বাংলাদেশি জনগণ এতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। যা মিয়ানমার জান্তা সরকার ইতিবাচকভাবে নেয়নি। এমনকি জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনএইচসিআরও বাংলাদেশের মানুষের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াকে ভালোভাবে নেয়নি। যার একটা প্রভাব পড়েছে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াতেও। ফলে এটিও এখন ঝুলে গেছে।

বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরত না পাঠিয়ে তৃতীয় কোনো নিরাপদ অঞ্চলে স্থানান্তরের পক্ষে মত দিয়েছিল জাতিসংঘ ও ইউএনএইচসিআর। তবে এ সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধানের প্রতি জোর দিয়েছিল জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। এ প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র সরকারও। এসব প্রস্তাবের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখনো অনেক দূরে।

এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখার কথা জাতিসংঘের। কিন্তু এই সংস্থাটিকে কেউই পাত্তা দেয় না। এসব ইস্যুতে জাতিসংঘই মূলত একটা অকার্যকর সংস্থা হিসেবে তার পরিচয় দিয়ে আসছে। ফলে রোহিঙ্গা সমস্যার আশু কোনো সমাধান সম্ভব নয় বলে তিনি মনে করেন।

Shera Lather
Link copied!