অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম দায়িত্বের ১ বছর অতিবাহিত করলেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুকে দেওয়া এক পোস্টে প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালনকালে শফিকুল আলম সর্বাধিক যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেইসবুক দেওয়া ইংরেজিতে দেওয়া এক পোস্টে এমন অনুভুতির কথা জানান তিনি। আজ বৃহস্পতিবার পোস্টটির বাংলা অনুবাদ শেয়ার করেন প্রেসসচিব।
ফেসবুক পোস্টে দায়িত্বের এক বছরের যাত্রাকে ‘চমৎকার’ বলে নিজের অনুভূতি তুলে ধরে নিজের কাজের মূল্যায়ন এবং কিছু সমালোচনার জবাব দিয়েছেন শফিকুল আলম।
শফিকুল আলম বলেন, গত ১ বছর আমি যেসব সর্বাধিক আলোচিত প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছিলাম তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে,
প্রশ্ন- হাসিনার ডাস্টবিনে আবর্জনা ফেলা কি প্রয়োজনীয় ছিল?
উত্তর- হ্যাঁ। তিনি একজন নির্মম স্বৈরশাসক ছিলেন এবং জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের পর তাকে বাংলাদেশে তার জায়গা দেখানো দরকার ছিল।
প্রশ্ন- আপনি কি বামপন্থীদের “বনসাই” বলেছিলেন?
উত্তর-না। আমি বলেছিলাম তারা বাংলাদেশকে বনসাই হিসেবে রাখতে চেয়েছিল।
প্রশ্ন-আপনার মেয়াদের পরে আপনি কি রাজনীতিতে যোগ দেবেন?
উত্তর- না। আমি সাংবাদিকতায় ফিরে আসব, ইনশাআল্লাহ।
প্রশ্নঃ- লন্ডনে আওয়ামী সমর্থকরা আপনার উপর আক্রমণ করেছিল?
উত্তর- চ্যাথাম হাউসের বাইরে কয়েকজন আমার উপর চিৎকার করে বলেছিল। এটি ছিল একটি যথাযথ পশ্চিমা ধাঁচের প্রতিবাদ – যা তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন আরও বেশি করলে ভালো হতো। তবে খুনের চেয়ে ঘেউ ঘেউ করা ভালো।
প্রশ্ন- আপনি কি একজন সরকারের মুখপাত্র নাকি প্রেস সচিব?
উত্তর- ক্লাসিক হোয়াইট হাউস মডেলে, একজন প্রেস সচিব হলেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব এবং সরকারের মুখপাত্র উভয়ই। ভূমিকাগুলি ওভারল্যাপ করে।
প্রশ্ন- “স্টারমার কানাডা সফর করেছিলেন” এটি কি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছিল?
উত্তর- না। প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাজ্য সফরের প্রথম দিনে, যুক্তরাজ্য সফরের প্রথম দিনে একজন ব্রিটিশ এমপি থেকে শুনেছিলাম, তিনি সম্ভবত সেখানে আছেন। আমি সেই তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়েছিলাম। ‘সম্ভবত’ শব্দটি বাদ পড়েই ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।
প্রশ্ন-কাজ কি উপভোগ করেছেন?
উত্তর-অবশ্যই। এটা ছিল এক বিশাল শেখার যাত্রা
প্রশ্ন-স্ট্রেস কেমন ছিল?
উত্তর- খুব একটা না—তবে চাইতাম দিনে ৩৬ ঘণ্টা থাকুক।
প্রশ্ন-সরকারের কর্মদক্ষতাকে কেমন বলবেন?
উত্তর- A++। বড় ধরনের সংস্কার চলছে, বিচার দ্রুত এগোচ্ছে, মনোযোগ মুক্ত, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দিকে।
প্রশ্ন-আপনার টিম?
উত্তর-অগ্রদূত—ভবিষ্যতের প্রেস টিমের জন্য মানদণ্ড স্থাপন করেছে।
প্রশ্ন- আর্থিক অবস্থা?
উত্তর- ধনী হইনি—বরং সঞ্চয়ের বড় অংশ খরচ হয়েছে।
প্রশ্ন-সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা?
উত্তর- লাইভে ভুল কিছু বলে ফেলা—যা আর ফিরিয়ে নেওয়া যাবে না।
এই এক বছরের অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে—যোগাযোগের দায়িত্ব যেমন উত্তেজনাপূর্ণ, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণও। প্রতিটি কথা, প্রতিটি ইঙ্গিত জনমত ও ইতিহাসে থেকে যায়। এই যাত্রা আমাকে বদলে দিয়েছে—আর তা হবে আমার সারাজীবনের পুঁজি।