ঢাকা সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

১৫ দিন পিতৃত্বকালীন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা!  

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
সরকারের লোগো। ছবি- সংগৃহীত

সরকারি চাকরিজীবী বাবাদের জন্য আসছে সুখবর। সন্তান জন্মের পর পরিবারের পাশে থাকার সুযোগ দিতে বাংলাদেশেও চালু হতে যাচ্ছে পিতৃত্বকালীন ছুটি। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস (পার্ট-১)-এর রুলস ১৯৭ সংশোধনের মাধ্যমে ১৫ দিন সবেতনে ছুটি দেওয়ার প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে জানা গেছে, এ বিষয়ে ফাইল চালাচালি শুরু হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের ৭৮টি দেশে পিতৃত্বকালীন ছুটি প্রচলিত থাকলেও বাংলাদেশে এ সুযোগ ছিল না। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আড়ং, ব্র্যাক ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যেই কর্মীদের এ সুবিধা দিয়ে আসছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব জানান, ২০১১ সালে মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাসে উন্নীত হলেও বাবাদের জন্য কোনো সুবিধা রাখা হয়নি। অথচ নবজাতকের জন্মের পর প্রথম দেড় মাস মায়ের শারীরিক অবস্থা ভঙ্গুর থাকে, আর বাবার উপস্থিতি তখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ছুটি না থাকায় প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি চাকরিজীবীকে স্ত্রী-সন্তানকে হাসপাতালে রেখে অফিস করতে হয়, ফলে নবজাতকের যত্ন নেওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না।

প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো প্রস্তাবে যে বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে:

  • ভারতে বাবারা সবেতনে ১০ দিনের ছুটি পান,
  • পাকিস্তানে এক মাস,
  • ভুটান ও শ্রীলঙ্কায় ১০ দিন,
  • স্পেনে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত,
  • আর সিঙ্গাপুরে অ-ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে প্রস্তাব করা হয়েছে একটানা ১৫ দিন সবেতনে পিতৃত্বকালীন ছুটি চালুর। মন্ত্রণালয়ের মতে, এ ছুটি বাবাদের মানসিক প্রশান্তি এনে কাজের প্রতি মনোযোগী করবে, মায়ের চাপ কমাবে এবং পরিবারে দৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলবে।

তবে এ বিষয়ে ভিন্নমতও রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম মনে করেন, ছুটিতে শর্ত থাকা উচিত। তার বক্তব্য অনুযায়ী, বাবারা যদি লিখিতভাবে উল্লেখ করেন কত ঘণ্টা নবজাতক ও মায়ের সেবা করেছেন, তবে এই ছুটি যৌক্তিক হবে, নইলে নয়।

এই মন্তব্য তিনি করেন গত ১৮ আগস্ট রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক কর্মশালায়। বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত ওই কর্মশালার প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।