নয় বছর আগে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) ৮১ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আরসিবিসির এ অর্থ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেন।
মামলায় উপস্থাপিত তথ্য-প্রমাণ, ফিলিপাইন সরকারের সরবরাহকৃত পারস্পরিক আইনি সহায়তা অনুরোধ (মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিস্ট্যান্টস রিকুয়েস্ট- এমএলএআর) এবং সংগৃহীত সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালত এই আদেশ দেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, আরসিবিসির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী লরেঞ্জো ট্যান, জুপিটার ব্রাঞ্চের ম্যানেজার মাইয়া সান্তোস ডিগুইতোসহ ব্যাংকের আরও কয়েকজন কর্মকর্তা পাঁচটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে অর্থ পাচারে জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় ফিলিপাইনের আদালত ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরসিবিসির ওপর বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ করেছে।
২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আরসিবিসি মাত্র ৬৮ হাজার মার্কিন ডলার ফেরত দিয়েছিল। তবে আদালতের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ঘটনাটি কেবল ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমিত ছিল না, বরং বাংলাদেশের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫)-এর ধারা ২৭ অনুযায়ী আরিসিবিসি কর্পোরেট সত্তা হিসেবে সম্পূর্ণভাবে অপরাধে জড়িত ছিল।
আদালত নির্দেশনা মোতাবেক বাজেয়াপ্ত হওয়া পুরো ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাংলাদেশ সরকারের কোষাগারে ফেরত পাঠাতে হবে। এ সংক্রান্ত আদেশ বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, জাতিসংঘের ইউনাইটেড ন্যাশন কনভেনশন এগেইন্সট ট্রান্সন্যাশনাল অরগানাইজড ক্রাইম (ইউএনটিওসি), ফিলিপাইনের আইন এবং ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ) নির্দেশনার আলোকে বাংলাদেশ সরকার ফিলিপাইন সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অর্থ ফেরতের উদ্যোগ গ্রহণ করবে, যাতে বাজেয়াপ্ত আদেশ কার্যকর হয় এবং পাচার হওয়া অর্থ বাংলাদেশে ফেরত আসে।