মানিকগঞ্জে দুই ছেলের বিরুদ্ধে ভরণপোষণ না করা, শারীরিক নির্যাতন ও ঘর থেকে তাড়ানোর অভিযোগে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী এক মা।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা রুজু হওয়ার পর দুই ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন জসিম (৫২) ও জাকির (৩৫)। তারা উভয়েই মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেওয়ারজানি এলাকার আব্দুর গফুর মিয়ার ছেলে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ সদর থানায় ৭০ বছর বয়সি জহুরা বেগম এজাহারটি দায়ের করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বৃদ্ধা জহুরা বেগম ও তার স্বামী আব্দুল গফুর মিয়া (৭৫) বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। তাদের গর্ভজাত দুই ছেলে—জসিম ও জাকির দীর্ঘদিন ধরে বাবা-মায়ের ভরণপোষণ, চিকিৎসা ও সেবা-যত্ন করছেন না। এ নিয়ে বহুবার অনুরোধ করলেও কোনো সাড়া দেননি তারা। বরং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিচার চাইলেও বিবাদীরা বিষয়টি তোয়াক্কা করেনি।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, গত ১৪ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে মানিকগঞ্জ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেওয়ারজানি এলাকায় নিজ বাড়িতে অবস্থানকালে জহুরা বেগম ও তার স্বামী খাবার চাইলে দুই ছেলে ও তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে বাগ্বিবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চারজনই যোগসাজশে তাদের গালাগাল, কিল-ঘুষি এবং ছেলে জাকির জুতা দিয়ে মারধর করেন। এতে জহুরা বেগম আহত হন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ থানার এসআই আব্দুল্লাহ হোসাইন জানান, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি জসিম ও জাকির উভয়েই বাদীর গর্ভজাত সন্তান। তারা দীর্ঘদিন ধরে মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পালন না করে অবহেলা ও অযত্নে রেখেছেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মাকে ভরণপোষণ না করা এবং মারধরের অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। দুই ছেলেকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, বৃদ্ধা জহুরা বেগম ও তার স্বামী আব্দুল গফুর মিয়া বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।