তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের দাবিতে দায়ের করা একাধিক আপিল আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়েছে ।
আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৮ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে মামলার আবেদনগুলোর শুনানি শুরু হয়।
এর আগে ২৭ আগস্ট আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেয় এবং আজকের দিনটি শুনানির জন্য নির্ধারণ করে।
১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৯৮ সালে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়, যা ২০০৪ সালে হাইকোর্ট খারিজ করে। পরবর্তীতে আপিল বিভাগের রায়ে ২০১১ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হয় এবং সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়। এরপর থেকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনগুলো অনুষ্ঠিত হয় রাজনৈতিক সরকারের অধীনে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। এ প্রেক্ষাপটে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিক সর্বপ্রথম ২৭ আগস্ট রিভিউ আবেদন করেন। পরে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা পৃথকভাবে একই ধরনের আবেদন করলে, রাজনৈতিক ও নাগরিক উদ্যোগ মিলিয়ে মোট চারটি রিভিউ আবেদন দায়ের হয়।
২৭ আগস্টের প্রাথমিক শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আদালত কোনো সাময়িক সমাধান নয়, বরং একটি কার্যকর ও টেকসই নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা চায়। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, গত দেড় দশকে মানুষ বিচারহীনতার শিকার হয়েছে, গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসবের প্রেক্ষিতে জনগণই রাজপথে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আইনজীবীদের মতে, এই শুনানির মাধ্যমে বাংলাদেশের নির্বাচন পদ্ধতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নতুন মোড় নিতে পারে। আদালতের রায় রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ব্যবস্থার ভিত্তি রচনায় ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন