মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম

‘তুমি না সরলে আমি মাহিরের হতে পারব না’

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৫, ০২:৩৫ পিএম

পরিকল্পনাকারী বর্ষা ও হত্যার শিকার জুবায়েদ

পরিকল্পনাকারী বর্ষা ও হত্যার শিকার জুবায়েদ

রাজধানীর পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইনের হত্যার পরিকল্পনায় নাম উঠে এসেছে তারই ছাত্রী ও প্রেমিকা বারজিসস সাবনাম বর্ষার। আর সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন তার প্রথম প্রেমিক মাহির।

পুলিশ বলছে, ঘাতক মাহিরের ছুরিকাঘাতে আহত জুবায়েদ তার ছাত্রী ও প্রেমিকা বর্ষার কাছে শেষ মুহূর্তে বাঁচার আকুতি জানিয়ে সিঁড়িতে যখন ছটফট করছিল, তখর জুবায়েদেরে উদ্দেশে বর্ষা বলেন, ‘তুমি না সরলে আমি মাহিরের হতে পারব না’। এর কিছু সময় পরেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান জুবায়েদ।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবের) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষার্থী জুবায়েদ পুরান ঢাকার বংশাল থানার নুরবক্স লেনের একটি বাসায় ছাত্রীকে পড়াতে গিয়ে হত্যার শিকার হন। নিহত জুবায়েদ বর্ষাকে পড়াতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমিকা বর্ষা একই সময়ে মাহির ও জুবায়েদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। ত্রিভূজ প্রেম থেকে বের হতে নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজান বর্ষা। এঘটনায় ছাত্রী বর্ষা তার প্রথম প্রেমিক মাহির ও তার বন্ধু ফারদিন আহমেদ আইলানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্ষা একই সময়ে তার গৃহশিক্ষক জুবায়েদ ও মাহিরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিল। গত ২৬ সেপ্টেম্বর বর্ষার প্রথম প্রেমিক মাহির বিষয়টি নিয়ে বর্ষাকে চাপ প্রয়োগ করলে সেদিনই গৃহশিক্ষক জুবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তারা। পরবর্তীতে মাহির ও তার বন্ধু আইলান মিলে চাকু কিনে গত ১৯ অক্টোবর বর্ষার বাসায় অবস্থান নেন। আর বর্ষা তার শিক্ষক ও প্রেমিক জুবায়েদকে ডেকে আনেন। এরপরই বর্ষার বাসার সিড়িঘরে জুবায়েদকে বলা হয় বর্ষার থেকে সরে আসতে। এ নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে জুবায়েদকে গলায় পোঁচ দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান মাহির ও তার বন্ধু আইলান। এই ঘটনায় তাদের তিনজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা তদন্তে পেয়েছি মাহির একই বাসায় ভাড়া থাকত। মাহির ও বর্ষার দীর্ঘদিনের পরিচয়। তবে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন দেড় বছর আগে। নিহত জুবায়েদ এক বছর ধরে বর্ষাকে পড়াতেন। মেয়েটা জুবায়েদের প্রতি দূর্বল হয়ে যায়। মেয়েটার অবস্থা ছিল এমন যে সে যখন যার কাছে যেত তার কথা বলত। এমন অবস্থায় মাহিরকে তার প্রেমিকা বর্ষা বলেছে, জুবায়েদকে না সরাতে পারলে আমি তোমার হতে পারব না। এভাবেই তারা জুবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। মাহিরের এক আঘাতেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান জুবায়েদ।

মাহিরকে তার মা থানায় হস্তান্তরের বিষয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, আসলে আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের নানা কৌশল থাকে। আগে চট্টগ্রামের রাউজানে নিয়মিত শিক্ষার্থী অপহরণ হতো, মুক্তিপণ আদায় করা হতো। আমরা তখন অপহরণকারীদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসে তাদের ব্যবহার করে সমঝোতার চেষ্টা করতাম। ঠিক এভাবেই আমরা মাহিরকে থানায় দিয়ে যেতে চাপ প্রয়োগ করেছি। এটা আমাদের কৌশলের অংশ। স্বেচ্ছায় থানায় হস্তান্তর করা হয়নি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হত্যার পুরো পরিকল্পনা বর্ষার। বরগুনার মিন্নির ঘটনার সঙ্গে অনেকাংশ মিল রয়েছে। মেয়েটা দুজনের কারো কাছ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। ফলে সে নিজেই হত্যার পরিকল্পনা সাজায়।

হত্যার পরিকল্পনা ও রাজনৈতিক কোনো বিষয় ছিল কি না জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, মাহির ও বর্ষা ২৬ সেপ্টেম্বর হত্যার পরিকল্পনা করে। এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নেই। এটা ত্রিভূজ প্রেমের ঘটনা।

হত্যার মুহূর্তে জুবায়েদেরে প্রেমিকা বর্ষার শেষ কথার বিষয়ে লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, বর্ষা আমাদের নিশ্চিত করেছে যে জুবায়েদ মারা যাওয়ার সময় সে উপস্থিত ছিল।

তদন্তে জানা গেছে, জুবায়েদের শেষ কথা ছিল বর্ষাকে উদ্দেশ করে 'আমাকে বাঁচাও'। বর্ষা তখন জুবায়েদেরে উদ্দেশে বলেন, 'তুমি না সরলে আমি মাহিরের হব না'। তদন্তে প্রকাশ পায় যে, দোতলার সিঁড়িতে জুবায়েদকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ সময় সে বাঁচার চেষ্টা করছিল। বর্ষাদের বাসা পাঁচতলায় হলেও ঘটনার সময় সে তিনতলার সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে নিচের হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করে।

প্রসঙ্গত, জুবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায় কৃষ্ণপুর গ্রামে। গতকাল জোবায়েদকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!