ঢাকা শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫

রাজনৈতিক দলগুলো সংঘাতের জন্য মুখিয়ে রয়েছে: মাহফুজ আলম

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৫, ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম
কথা বলছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি - সংগৃহীত

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো সংঘাতের জন্য মুখিয়ে রয়েছে। তবে প্রধান উপদেষ্টার অবস্থানের কারণে এখন পর্যন্ত তারা সরাসরি সংঘাতে জড়াচ্ছে না। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যদি ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ এই পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে দেশের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

আজ শনিবার (২৫ অেক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএমএ ভবনে ‘মাজার সংস্কৃতি: সহিংসতা, সংকট ও ভবিষ্যৎ ভাবনা’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে মাহফুজ আলম এসব কথা বলেন। সংলাপের আয়োজন করে সুফি সম্প্রদায় নিয়ে গবেষণা করা প্ল্যাটফর্ম ‘মাকাম’।

মাহফুজ আলম বলেন, আওয়ামী লীগ ‘দরবারগুলোর’ সঙ্গে সংযোগ তৈরি করার চেষ্টা করছে। দরবারগুলোকে বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে, পূর্ববর্তী সরকারের সময় মাজার ভাঙা বা মসজিদ থেকে বের করা হয়েছে। তবে তিনি এ প্রসঙ্গে মনে করেন, এটি কোনো অন্তর্বর্তী সরকারের ইস্যু নয়, এটি ৫০ বছরের পুরনো সমস্যা। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মসজিদ কমিটি ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের গভর্নিং কমিটি বদলে যায়।

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় ফ্যাসিবাদ চলে গেলেও সামাজিক জায়গায় ফ্যাসিবাদ এখনো বিদ্যমান। দেশের মুসলিম সমাজের মধ্যে সংলাপ ও সংযোগের সুযোগ তৈরি না হলে রাষ্ট্র শঙ্কার মধ্যে থাকবে। ৯০ থেকে ৯২ শতাংশ মুসলমানের মধ্যে বিভিন্ন তরিকা রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতারা কখনোই এগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের পথ খুঁজেননি। বরং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।’

মাহফুজ আলমের মতে, গত ১৫ বছরে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আদর্শিক বিরোধিতার জায়গা থেকে সুফি ঘরানাদের সংযোগ ঘটেছে। এই সংযোগের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তাদের সুরক্ষা দেবে এবং তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে। এভাবে ধর্মীয় রাজনীতিতে আটকে গেছে। কওমি শিক্ষাও এর বাইরে নয়; তাদেরকেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, দেশে বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্রের দূতাবাসের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে। কিছু দূতাবাস চায় মাজারগুলো ধ্বংস হোক। তাই ধর্মীয় জনগোষ্ঠী লড়াই বা সংঘাতের ভয় না পেয়ে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক নীতি থেকে এসব সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, গত এক বছরে কিছু কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ার কারণে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষোভ থেকে পাল্টা আঘাতের চিন্তা করলে কোনো ভালো কিছু হবে না। মাজারে হামলার পর অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এবং এখন সমীক্ষা করে মাজার সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি মাজার পরিচালনাকারীদেরও মামলা করার আহ্বান জানান। মাহফুজ আলম বলেন, ‘এই সংস্কৃতি যদি টিকে থাকে, তাহলে অন্য কোন দলের ইসলাম এসে অন্য মসজিদ ভেঙে দেবে। আজ সুফিদের ওপর হামলা হচ্ছে, আগামীকাল কওমিদের ওপর হতে পারে। এটি চলতে দেয়া যায় না।’