জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত সুপারিশমালা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে হস্তান্তর করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে কমিশনের সদস্যরা সনদ বাস্তবায়নের সার্বিক প্রস্তাব ও কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় এই হস্তান্তর অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপদেষ্টা পরিষদের অন্য সদস্যদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঐকমত্য কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা পবন চৌধুরী। তিনি জানান, কমিশনের সুপারিশমালায় জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের বিভিন্ন ধাপ, নীতিগত দিকনির্দেশনা ও সময়সূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ বাস্তবায়নের অগ্রাধিকারভিত্তিক সুপারিশ ও রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা কমিশনের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও সুশাসন বাস্তবায়নে এ সনদ দেশের জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
সংস্কারের মাধ্যমে দেশে সুশাসন, গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যতে কর্তৃত্ববাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধে অন্তর্বর্তী সরকার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়। এই লক্ষ্যেই সরকার সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও দুর্নীতি দমনসংক্রান্ত কাঠামোগত সংস্কারের জন্য ছয়টি পৃথক কমিশন গঠন করে।
পরবর্তীতে এসব কমিশনের দেওয়া সুপারিশগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরির জন্য গঠিত হয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনটি দেশের ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে সংবিধানসহ রাষ্ট্র পরিচালনার বিভিন্ন খাতে সংস্কারের সুপারিশ নিয়ে প্রণয়ন করে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’।
এই জুলাই জাতীয় সনদে মোট ৮৪টি প্রস্তাবনা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫টি রাজনৈতিক দল ও জোট স্বাক্ষর করে সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। সনদটি দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক কাঠামো ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার রোডম্যাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।



সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন