বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম

‘গণভোটের বিষয়ে দ্রুতই সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধান উপদেষ্টা’

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০৬:১৮ পিএম

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে খুব শিগগিরই প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে তীব্র বিরোধ তৈরি হয়েছে, তা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা উপদেষ্টারা তার সহায়ক হিসেবে কাজ করব। গণভোটের সময় ও ধরন নিয়ে কোনো একক ব্যক্তি বা দল সিদ্ধান্ত নেবে না। প্রধান উপদেষ্টা দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলগুলোর মতামত বিবেচনা করেই দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে টানাপোড়েন চলছে, তা থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো সংলাপ ও পারস্পরিক সমঝোতা। প্রধান উপদেষ্টা সেই লক্ষ্যেই সব পক্ষের মতামত শুনছেন।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে একটি বিস্তারিত সুপারিশপত্র জমা দিয়েছে। সেই সুপারিশে বলা হয়েছে, জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট আয়োজন জরুরি। কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগেই অথবা নির্বাচনের দিনই অনুষ্ঠিত হতে পারে।

জুলাই সনদে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করেছিল অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। তবে সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে নতুন করে বিরোধ দেখা দিয়েছে।

গণভোটের সময় নিয়ে সবচেয়ে বড় মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—এই দুই দলের মধ্যে। জামায়াতে ইসলামী বলেছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করেই জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। তাদের মতে, আগে সনদ বৈধতা না দিলে নির্বাচনের ফলাফল রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত হয়ে পড়বে।

অন্যদিকে বিএনপি বলছে, নির্বাচনের দিনেই গণভোট আয়োজন করতে হবে। এর বাইরে কোনো আলোচনার সুযোগ নেই। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গণভোটের আগে নির্বাচনের আলোচনা অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয়। জনগণের রায়ের মাধ্যমে সব নির্ধারিত হবে নির্বাচনের দিনেই।’

বিএনপি আরও অভিযোগ করেছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জমাকৃত প্রতিবেদনে এমন অনেক বিষয় সংযোজন করা হয়েছে, যা জুলাই সনদের মূল চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তারা বলছে, ‘যে সনদে দলগুলো স্বাক্ষর করেছিল, সেটির বাইরে নতুন কোনো প্রস্তাব আমরা গ্রহণযোগ্য মনে করি না।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘গত ২৭০ দিন ধরে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে সংলাপ করেছে। প্রত্যেক দলকে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এত সময় ও সুযোগ দেওয়ার পরও এখন যে অনৈক্যের সুর শোনা যাচ্ছে, তা অত্যন্ত হতাশাজনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো রাজনৈতিক দল নিজের অবস্থান চাপিয়ে দিতে চায়, তাহলে সেটি প্রমাণ করে যে তাদের মধ্যে প্রকৃত ঐকমত্য নেই। সরকার কোনো দলের একক অবস্থান গ্রহণ করবে না। সরকার নিরপেক্ষভাবে দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই সনদের চেতনা ছিল সব দল মিলে একসঙ্গে এগোনো, পারস্পরিক আস্থা তৈরি করা। কিন্তু এখনকার রাজনৈতিক অবস্থানগুলো সেই চেতনার পরিপন্থী। দলগুলো নিজেদের স্বার্থকে জনগণের স্বার্থের ওপরে স্থান দিচ্ছে, যা গণতন্ত্রের জন্য ভালো লক্ষণ নয়।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিরোধ জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেও দৃঢ়ভাবে জানান আইন উপদেষ্টা।  তিনি বলেন, ‘যে যা-ই বলুক, আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে বদ্ধপরিকর। নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক—এ ব্যাপারে সরকারের অঙ্গীকার অটল।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচিত সংসদের দায়িত্ব থাকবে নীতি নির্ধারণ ও সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। তবে অন্তর্বর্তী সরকারও যতটুকু সম্ভব সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবে। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য প্রয়োজন, কারণ সংস্কারের সাফল্য নির্ভর করে সবার অংশগ্রহণের ওপর।’

সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘গণভোট শুধু একটি রাজনৈতিক ইভেন্ট নয়, এটি জাতীয় দায়িত্ব। এটি নির্ধারণ করবে—দেশ কোন পথে এগোবে, গণতন্ত্র কীভাবে বিকশিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা এই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। তিনি শিগগিরই জাতিকে গণভোটের বিষয়ে স্পষ্ট সিদ্ধান্ত জানাবেন।’

তিনি আরও আহ্বান জানান, ‘সব রাজনৈতিক দলের এখন উচিত দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে এসে জনগণের প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, জনগণই এই সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত মালিক।’

Link copied!