ঢাকা সোমবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৫

যে কারণে ঢাকা ৭ আসনে নির্বাচন করতে চান আসিফ

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৫, ০৮:১০ পিএম
মো. আসিফ উদ্দিন (সম্রাট)। ছবি- সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা ৭ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. আসিফ উদ্দিন (সম্রাট)। আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রপতি পদকপ্রাপ্ত, দক্ষিণ এশিয়ার জলবায়ু ও পরিবেশ বিষয়ক শুভেচ্ছাদূত এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু ও পরিবেশবিদ হিসেবে তিনি এরই মধ্যে স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার লালবাগ, চকবাজার, বংশাল, কোতোয়ালি এবং কামরাঙ্গীরচরের কিয়দংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-৭ আসনে চষে বেড়াচ্ছেন আসিফ। ব্যবসার পাশাপাশি এখন তার ভাবনাজুড়ে ঢাকা-৭ আসন।

ঢাকা আসন ৭ বেছে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে আসিফ বলেন, বেছে নেয়ার কারণ হলো, ঐতিহাসিক অঞ্চল হিসাবে সংসদীয় আসন ঢাকা ৭ পুরান ঢাকার ঐতিহ্যগত ও বাংলাদেশের ব্যবসায়িক অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। নদীমাতৃক এ দেশে হাজার বছর ধরে পুরান ঢাকার চার শত বছর ইতিহাসে নদীমাতৃক অর্থনৈতিক এক বৃহৎ অঞ্চল হিসেবে ঢাকা ৭ আসনকে মূল্যায়ন না করার কোন কারণ নাই। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে পুরনো ও আঞ্চলিক ব্যবসায়িক হাব হিসাবে নদী-মাতৃক অর্থনৈতিক অঞ্চল তথা বুড়িগঙ্গা নদী কেন্দ্রিক বাণিজ্যিক এলাকাগুলোকে আরো টেকসই অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।

তিনি বলেন, নদীমাতৃক ট্যুরিজম থেকে নদীমাতৃক ট্রান্সপোর্ট যা দেশের ৬৩ টি জেলায় উত্তর-পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম নদী কেন্দ্রিক ব্যবসায়িক বন্দরগুলো চাঙ্গা আছে। এই অঞ্চলগুলোকে জন আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দু ও ঐতিহাসিক মর্যাদাপূর্ণ গড়ে তুলতে পরিবেশ বান্ধব অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা অপরিহার্য। আসন ঢাকা ৭ থেকে সংসদীয় নেতৃত্বে একজন সৎ ও ব্যক্তিত্বপূর্ণ গুণাবলির সাথে পরিবেশ সংক্রান্ত অভিজ্ঞ ব্যক্তি এবং এই মাটির যোগ্য সন্তান হওয়া খুবই জরুরি। একটি টেকসই ঢাকাইয়া কেন্দ্রিক বাণিজ্যিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে দরকার যোগ্য ও আদর্শিক নেতৃত্ব। এই অঞ্চলের সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তার লক্ষ্যে কাজ করতে চাই।

আপনার দৃষ্টিতে রাজনীতি কেমন হওয়া উচিৎ? উত্তরে আসিফ বলেন, নিজেকে মজলুমের পক্ষে, দেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা পন্থী মানসিকতা মাথায় রেখে মেহনতি মানুষের জন্য, পাশে থাকা সেই বন্ধুর জন্য সকল প্রতিকূলতা মোকাবেলা করাই প্রকৃতপক্ষে রাজনীতি। শুধু বিপ্লবকে ধারণ করলেই রাজনীতি শুদ্ধ হয়ে যায় না, বিপ্লব আর রাজনীতি দুটো দুই জিনিস। রাজনীতি হলো লম্বা রেসের ঘোড়া। আপনাকে অনন্তকাল দৌঁড়াতে হবে, আর দৌঁড়ানোর আগে হাঁটতে শিখতে হবে। আপনি রাজনীতির ময়দানে হাটা শুরু করেছেন, সবসময় বিরোধী দলের মানসিকতা নিয়ে রাজনীতি করুন। আপনার রাজনৈতিক অবস্থান ও ব্যক্তিত্ব মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। 

তিনি বলেন, ক্ষমতার মসনদে বসার রাজনৈতিক মানসিকতা আপনাকে অহংকারী, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিস্ট করে গড়ে তুলবে। আপনি চাইলে অতীতে নমরুদ আর ফেরাউন-এর ইতিহাস পড়ে আসুন, বুঝতে সহজ হবে। তাদের ধ্বংস ও বিলুপ্ত হবেই। আপনি যখন একজন রাজনীতিবিদ, ধৈর্য আপনার প্রধান খোরাক, তেমনি বিনয়ী ও আচরণ আপনাকে করবে মানুষের কাছে অনন্য। এর থেকে কোনটার বিচ্যুতি আপনার জনবিচ্ছেদ ঠেকাতে পারবে না। কেননা ছোট কিংবা বড় কেউ কাউকে নিজের অজান্তেই যদি অসম্মান ও মানুষকে কষ্ট দিলে তো সামান্য নেকি হাসিল করা যায় না, রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়ে ক্ষমতা হাসিল তো অনেক বড় ব্যাপার। তাই মানুষকে কষ্ট দিয়ে রাজনীতি করতে যাবেন না। প্রয়োজনে ত্যাগ স্বীকার করুন, সাময়িক এমন অনেক প্রাপ্তি থেকে সরে আসুন, ধৈর্য ধারণ করুন মহান রব আল্লাহ মানুষের কাছে আপনাকে মহান লিডার তৈরি করবে। প্রয়োজনে নীরবে নিভৃতে ইবাদত বন্দেগীতে নিজেকে নিযুক্ত করুন। দলের বিরুদ্ধ চারণ কিংবা নিজের আবেগের আত্মপ্রকাশ পাবলিকলি অনেকেই আপনার সুযোগ নিতে পারে যা আপনার ব্যক্তিত্ব ও মানসিকতার জন্য নেহায়েত ঝুঁকিপূর্ণ। 

আসিফ বলেন, অতীতের বহু উদাহরণ আছে, বড় বড় রাজনৈতিক দলের অনেক লিজেন্ডারি নেতাদের সাথে ঘটেছে, চাইলে ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে আসতে পারেন। পরিশেষে আমার ব্যক্তিগত মতামত ও দীর্ঘ ২০ বছর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা বলে, রাজনীতি শেষ কথা বলে কোন কথা নেই। রাজনীতি আপনার জীবনকে সংজ্ঞায়িত করে না বরং আপনার জীবনের কোন একটা অংশের নাম হচ্ছে রাজনীতি। রাজনীতি করতেই হবে এটা জরুরি না বরং জীবনকে উপভোগ করতে হবে এটাই জরুরি। ‌সুতরাং রাজনীতি করুন বা না করুন, সময়কে উপভোগ করুন, সম্মান করুন। কেননা সময় বড় সমাধান।

সর্বশেষ তিনি বলেন, আমরা কোন আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রের গোলাম নই, আমরা সেই রাষ্ট্র যে সাম্য, সমতা ও বৈষম্যহীন কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় বিশ্বাসী। এই দিন দিন নয় আরো দিন আছে, এই দিন নিয়ে যাবে সেই দিনেরও কাছে, বহু কাছে মহানগর দক্ষিণ রাজনৈতিক নেতৃত্ব হোক ভয়শূন্য, মেধা বৃত্তিক সম্মানের। সবাই ভালো থাকবেন।