ঢাকা বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৫

তামাকের ক্ষতি ঠেকাতে আইন আরও শক্তিশালী করার আহ্বান

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২৫, ০৯:৩১ পিএম
। ছবি- সংগৃহীত

জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন পুনঃসংশোধনের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন জানিয়েছেন ২০ জন সাংবাদিক। 

বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে তারা গণমাধ্যমে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে সাংবাদিকরা উল্লেখ করেন, ‘তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার দেশে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ফুসফুসের জটিল রোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়াচ্ছে। এসব রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় প্রতিবছর প্রায় ৪ লাখ মানুষ শুধু চিকিৎসার খরচের কারণে দরিদ্র হয়ে পড়ছে। তামাক পরিবেশ, প্রকৃতি ও খাদ্য উৎপাদনকেও হুমকির মুখে ফেলছে। তারা বলেন, শিশু-কিশোরদের তামাকের দিকে আকৃষ্ট করার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে তামাক কোম্পানিগুলো।’

সাংবাদিকরা সতর্ক করেছেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে বাধা দিতে কোম্পানিগুলো নানা অপকৌশল ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে একটি প্রচলিত কৌশল হলো, সরকারের রাজস্ব আয় কমে যাবে বলে ভুল ধারণা সৃষ্টি করা। তবে ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে দেশে তামাক ব্যবহার প্রায় ১৮ শতাংশ কমেছে। গত ২০ বছরে তামাক খাত থেকে রাজস্ব আয় ১৪ গুণ বেড়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালে তামাক ব্যবহারের কারণে স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ক্ষতি ছিল ৮৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৬৫ হাজার কোটি টাকাই স্বাস্থ্য ব্যয়। একই সময়ে তামাক থেকে রাজস্ব আয় ছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা, যা ক্ষতির অর্ধেকেরও কম। ফলে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে এবং স্বাস্থ্য ও মৃত্যু কমানো সম্ভব।

সাংবাদিকরা আরও উল্লেখ করেন, তামাক কোম্পানিগুলো আইন, কর বৃদ্ধি ও বিক্রয় নিয়ন্ত্রণকে ব্যহত করতে সক্রিয় প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা শিশু-কিশোরদেরকে ভেপিং ও ই-সিগারেটের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য গোপন ইভেন্ট আয়োজন করছে।

এ অবস্থায় সাংবাদিকরা নীতি নির্ধায়কদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষায় অবিলম্বে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং কার্যকর তামাক কর নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নিতে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন: ইত্তেফাক পত্রিকার ডিজিটাল বার্তা সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক আবু খালিদ, একাত্তর টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিনিধি সুশান্ত সিনহা, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার মানিক মুনতাসির, দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন নয়ন, দ্য ডেইলি স্টারের স্টাফ রিপোর্টার সুকান্ত হালদার, দৈনিক খোলা কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার মো. আলতাফ হোসেন, টাইমস অব বাংলাদেশের স্টাফ রিপোর্টার মো. আল আমিন, সংবাদের স্টাফ রিপোর্টার রেজাউল করিম, প্রতিদিনের সংবাদের স্টাফ রিপোর্টার মো. জাহিদুল ইসলাম ও মো. মেহেদী হাসান, ঢাকা মেইলের স্টাফ রিপোর্টার মো. আব্দুল হাকিম, সারা বাংলা ডটকমের সিনিয়র রিপোর্টার এমদাদুল হক তুহিন, ভোরের কাগজের সিনিয়র রিপোর্টার মরিয়ম সেজুতি, বাংলা ভিশন টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মামুন আব্দুল্লাহ, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের রিপোর্টার তানজিলা আক্তার, আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদ্জ্জামান নূর ও মিম ওবায়দুল্লাহ, ঢাকা পোস্টের স্টাফ রিপোর্টার রাকিবুল হাসান তামিম ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের রিপোর্টার মো. মিয়ামুন হোসেন।