শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (মাগুরা-১) ও ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তিনিসহ মামলাটির আরও ১৪ আসামিকে আগামী ২৫ ও ২৬ নভেম্বর দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে। এই মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ২৫৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে তাদের তলব করে দুদক। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, ‘২৬ নভেম্বর সকাল ১০টায় সাকিব আল হাসানকে হাজির হতে বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক একটি অনুসন্ধানও চলছে। ওই অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট তথ্যও একই দিন গ্রহণ করা হবে।’
দুদক জানায়, শেয়ারবাজারে অনিয়ম-দুর্নীতি ও কারসাজির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করে ক্ষতি করান সমবায় অধিদপ্তরের সাবেক উপনিবন্ধক মো. মোহাম্মদ আবুল খায়র ওরফে হিরু। তিনি সেখান থেকে অর্জিত অর্থ লেয়ারিং করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন।
এই ঘটনায় সাকিব আল হাসানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ জারি করা হয়েছে।
এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন: আবুল খায়েরের (হিরু) স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মো. বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
সাকিব আল হাসানের সংশ্লিষ্টতা প্রসঙ্গে মামলার এজাহারে বলা হয়, তিনটি কোম্পানির কারসাজি করা শেয়ারে বিনিয়োগ করে প্রতারণায় যোগ দেন সাকিব। এই কোম্পানিগুলো হলো: প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইনস্যুরেন্স ও সোনালী পেপারস লিমিটেড, যার মাধ্যমে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি ‘রিয়েলাইজড ক্যাপিটাল গেইন’ নামে অপরাধলব্ধ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন সাকিব।
দুদকের এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামি আবুল খায়ের সহযোগীদের সঙ্গে যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯-এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিও হিসাব ব্যবহার করে ফটকা ধাঁচের সিরিজ লেনদেন, প্রতারণামূলক অ্যাকটিভ ট্রেডিং, গ্যাম্বলিং স্পেকুলেশনসহ বিভিন্ন পদ্ধতিতে বাজার কারসাজি করে নির্দিষ্ট শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা ক্ষতি হয়েছে।


