রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে শেখ রেহানাকে ১০ কাঠা সরকারি প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার ও ফৌজদারি অসদাচরণ আদালতের পর্যবেক্ষণে প্রমাণিত হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা এই মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত–৪ শেখ হাসিনাকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।
রায়ে বিচারক রবিউল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে থেকে শেখ হাসিনা আইন ও বিধি লঙ্ঘন করেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অধীনস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রভাবিত করেন এবং তার বোন শেখ রেহানার নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নিশ্চিত করেন।
আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সুবিধা এবং ফৌজদারি অসদাচরণ।
রায়ের বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিকের প্ররোচনায় শেখ হাসিনা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রভাব বিস্তার করেন। মামলার সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি এসব অভিযোগকে সমর্থন করে।
বিচারক রায়ে মন্তব্য করেন, দুর্নীতি এখন ‘সমাজকে গ্রাস করা এক ভয়াবহ ব্যাধি’। এ ব্যাধির বিরুদ্ধে সবাইকে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এই মামলায় শেখ রেহানাকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকিকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বোন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্য ১৪ আসামিকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে সবার ক্ষেত্রে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে।
রায়ে শেখ রেহানার নামে বরাদ্দকৃত ১০ কাঠা প্লটও বাতিল করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৩ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশন এ মামলাটি দায়ের করে। তদন্ত শেষে মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। মামলায় আদালতে মোট ৩২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।


