ঢাকা বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

সৌরবিদ্যুতের ১২ প্রকল্প অনুমোদন, বছরে সাশ্রয় ১১৬৯ কোটি টাকা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৯, ২০২৫, ১১:২৪ পিএম
সৌরবিদ্যুতের ১২ প্রকল্প অনুমোদন। ছবি- সংগৃহীত

বাতিল হওয়া সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর পুনঃমূল্যায়ন করে নতুনভাবে ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করতে গেলে সরকার আগের তুলনায় কম ট্যারিফে বিদ্যুৎ পাবে। এতে বছরে প্রায় ১ হাজার ১৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা সাশ্রয় হতে পারে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

উপদেষ্টা কমিটি জানায়, পূর্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর আওতায় স্থাপিত অনেক প্রকল্পে গড় ট্যারিফ প্রতি ইউনিটে ছিল ১৩ টাকার বেশি। নতুন দরপত্রে তা কমে ৯ টাকার মধ্যে নেমে এসেছে। এতে ১২টি প্রকল্প থেকে দীর্ঘমেয়াদে সরকার বড় অঙ্কের অর্থ সাশ্রয় করতে পারবে।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একমাত্র দরদাতা প্রতিষ্ঠান কনফিডেন্স পাওয়ার হোল্ডিং লিমিটেডের সঙ্গে ২০ বছর মেয়াদে ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদনের অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা কমিটি। প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে সরকারকে দিতে হবে আনুমানিক ৯.৪৫৫ টাকা।

পাবনা জেলায় ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পও অনুমোদিত হয়েছে। যৌথভাবে প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল ও প্যারামাউন্ট হোল্ডিং এর সঙ্গে ২০ বছরের চুক্তি সম্পাদন হবে। এই প্রকল্পের ইউনিট ট্যারিফ ৯.৬২৫৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

নোয়াখালীর সুধারামে ১০ মেগাওয়াট, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ১৮ মেগাওয়াট, মৌলভীবাজারে ২৫ মেগাওয়াট এবং ফটিকছড়িতে ৪৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার পৃথক প্রকল্পগুলোর ট্যারিফ ৮.৯৯ থেকে ৯.৩২৪ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করা হয়েছে।

কক্সবাজারের চকরিয়া ১০০ মেগাওয়াট, রামু ১০০ মেগাওয়াট, নবীগঞ্জ ৫০ মেগাওয়াট এবং মোংলার বুড়িরডাঙ্গা ১০০ মেগাওয়াটের প্রকল্পগুলোও অনুমোদিত হয়েছে। এসব প্রকল্পের জন্য ২০ বছরের জন্য নির্ধারিত ইউনিট ট্যারিফ ৭.৯৬৬৬ থেকে ৯.৯১৮৬ টাকার মধ্যে রয়েছে।

পাবনার হেমায়েতপুরে ৭০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পও অনুমোদিত হয়েছে। প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল এবং প্যারামাউন্ট হোল্ডিং যৌথভাবে এটি বাস্তবায়ন করবে। এখানে প্রতি ইউনিট ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে ৯.৬৩৮ টাকা।

এছাড়া ময়মনসিংহে রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড পরিচালিত ২১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ট্যারিফও পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। পূর্বে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ছিল ৬.৩৫১৬ টাকা, যা কমিয়ে ৫.৩৪৭৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৩ বছর ১১ মাস ১৮ দিনের মেয়াদে এই কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের জন্য সরকারকে ব্যয় হবে আনুমানিক ৩ হাজার ১২৮ কোটি টাকার বেশি।

উপদেষ্টা কমিটি জানায়, পুনঃদরপত্র প্রক্রিয়া এবং ‘নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্ট’ ভিত্তিতে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন সরকারের জন্য স্বচ্ছতা ও দীর্ঘমেয়াদী সাশ্রয় নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে দেশের পরিকল্পিত অগ্রগতি আরও শক্তিশালী হবে।