২০ মে ২০২৫—ব্যবসায়ীদের বহুদিনের দাবির জবাব দিয়ে গণ–অভ্যুত্থানের ফলশ্রুতিতে গঠিত সরকার ‘বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ২০২৫’ সংস্কার করে গেজেট প্রকাশ করেছে। ঘোষণার পরপরই সাধারণ ব্যবসায়ীরা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও স্বার্থান্বেষী একটি মাত্রা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
কেননা নতুন বিধিমালায় যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছে, সেগুলোই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীরা চেয়ে এসেছেন সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও পরিচালকের পদে সরাসরি ভোট, মনোনীত পরিচালকের সংখ্যা বড় মাত্রায় কমানো, এবং পরিচালনা পর্ষদকে পরিচালনার উপযোগী আকারে সীমিত রাখা।
এই সংস্কার পন্থাকে কালো আইন আখ্যা দিচ্ছে যারা, অতীতে তারাই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষকতায় সাজানো-গোঁজা ভোটে অংশ নিয়েছে, শেখ ফজলে ফাহিমের প্যানেলে ‘বি-টিম’ হিসেবে যুক্ত থেকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করেছে।
আজ তারা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ব্যবসায়ী সমাজকে বিভ্রান্ত করতে চায়, দাবি তোলে ‘পুরনো বিধি ফিরিয়ে আনো’ অথবা ‘পরিচালকের সংখ্যা বাড়াও’—কিন্তু কোনও সমন্বিত প্রস্তাব তাদের নেই। উদ্দেশ্য একটাই ‘বাণিজ্য খাতে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে সরকারের সংস্কার ও আসন্ন নির্বাচন বানচাল করা।’
অথচ সরকার ইতিমধ্যেই ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তি, ব্যবসায়ী স্টেকহোল্ডার এবং সুশীল সমাজের সঙ্গে আলোচনা করে নানা খাতে কাঠামোগত সংস্কার শুরু করেছে।
নতুন বিধিমালা নিশ্চিত করবে, প্রকৃত ব্যবসায়ী নেতারাই এফবিসিসিআই পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন। আগে যেখানে নির্বাচনের তোয়াক্কা না করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তালিকা পাঠিয়ে পর্ষদ গঠন হতো, সেখানে এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ২০২৫-২৬ এবং ২০২৬-২৭ মেয়াদের জন্য নির্বাচন ও আপিল বোর্ড গঠন করেছে।
অর্থাৎ, এফবিসিসিআই-এর ‘নির্বাচনী ট্রেন’ ইতিমধ্যে প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে গন্তব্যের পথে।
এ পর্যায়ে কিছু ‘মানববন্ধন’ করে বিধি বাতিলের দাবি তুলেছে যেসব মুখ, তারা ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি নয়, বরং পতিত স্বৈরাচারীদের ছায়াসঙ্গী। ব্যবসায়ী সমাজকে মনে রাখতে হবে, সংস্কার বাতিল মানে আবারও অন্ধকারে ফেরা, যেখানে আমি-ডামি নির্বাচন আর নির্দেশিত তালিকার দখলে প্রতিষ্ঠান জিম্মি থাকে। আমরা সেই যুগে ফিরতে চাই না। আমাদের সন্তানেরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, তার মর্যাদা রাখাই এখন ব্যবসায়ীদের কর্তব্য।
তাই ব্যবসায়ী বন্ধুদের উদাত্ত আহ্বান: ফ্যাসিস্ট লেজুড়বৃত্তি পরিহার করুন, অপপ্রচারে কান দেবেন না। আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিন, উৎসবমুখর পরিবেশ গড়ে তুলুন, সম্মানিত ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সব সুবিধা নিশ্চিত করুন।
মনে রাখবেন, সংস্কার তখনই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে, যখন ব্যবসায়ীরা নিজেরা ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেবেন এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ঘটবে।
একটি দক্ষ, গণতান্ত্রিক, স্বচ্ছ এফবিসিসিআই প্রতিষ্ঠা করা গেলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা যেমন সহজ হবে, তেমনি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিও লাভবান হবে। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই সংস্কারকে শক্ত ভিত দিই এবং একটি সুখী, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে অবদান রাখি।
আতিকুর রহমান, আহবায়ক, লিয়াজোঁ ও মিডিয়া কমিটি, বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ।

 
                             
                                    
-20250415074300.webp)
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
       -20251031160223.webp) 
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন