ঢাকা সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

বিশ্লেষণ

রাশিয়া কি বেলারুশকে গ্রাস করবে?

দ্য ইন্টারেস্ট
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ০৪:৩১ পিএম
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণ ছিল প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে জয়ের এক আগ্রাসী প্রয়াস। এর আগে, ২০২০ সালের বিতর্কিত নির্বাচন ও এর পরবর্তী সময়ে সহিংস দমন-পীড়নের পর বেলারুশ ক্রমেই আন্তর্জাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হতে থাকে এবং মস্কোর কক্ষপথে আরও গভীরভাবে ঢুকে পড়ে। আজকের দিনে এসে দেশটি কার্যত রাশিয়ার প্রতি সম্পূর্ণভাবে আত্মসমর্পণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

২০২০ সালের সেই নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এবং তার বিরুদ্ধে জনবিক্ষোভের ওপর কঠোর দমন-পীড়নের ফলে বেলারুশ আন্তর্জাতিক পরিসরে একঘরে হয়ে পড়ে। পশ্চিমা বিশ্লেষকদের চোখে দেশটি এখন অনেকটাই ‘ইউরোপের উত্তর কোরিয়া’ নামে পরিচিত।

শাসন ব্যবস্থাটি এখনও সোভিয়েত ঘরানার কর্তৃত্ববাদ অনুসরণ করে, যেখানে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার নাম কেজিবি-ই রয়ে গেছে এবং তার নেতৃত্বে রয়েছেন সোভিয়েত আমলের পুরোনো রক্ষণশীল কর্মকর্তারা।

পশ্চিমা দেশগুলোর কঠোর নিষেধাজ্ঞা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের ভাঙনের ফলে প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো আজ অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা-নির্ভরতার ক্ষেত্রে পুরোপুরি রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।

রাশিয়ান পুতুল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে বেলারুশ

বেলারুশ এখন কার্যত একটি রুশ ‘পুতুল রাষ্ট্রে’ পরিণত হয়েছে। ক্ষমতা ধরে রাখার মরিয়া প্রচেষ্টায় প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর কাছে ক্রেমলিনকে সম্পূর্ণভাবে আলিঙ্গন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। এর মাধ্যমে তিনি বেলারুশের অবশিষ্ট সার্বভৌমত্ব কার্যত মস্কোর হাতে তুলে দিয়েছেন।

বর্তমানে বেলারুশে রাশিয়ার কয়েক ডজন কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন রয়েছে এবং নতুন একটি নিরাপত্তা চুক্তির অধীনে দেশটি রাশিয়ার হাইপারসনিক ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে বেলারুশকে আনুষ্ঠানিকভাবে মস্কোর পারমাণবিক ছাতার আওতায় আনা হয়েছে।

রাশিয়ার প্রতি এই গভীর আনুগত্যের পাশাপাশি, লুকাশেঙ্কো তার অভ্যন্তরীণ শাসনক্ষমতার ওপরও একইরকম কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আরেকটি নির্বাচনে তাকে আবারও রাষ্ট্রপতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যেখানে তিনি ৮৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পাওয়ার দাবি করেন।

২০২০ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সময়ের বিপরীতে এবারের নির্বাচনে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য বিরোধিতা দেখা যায়নি। এর অন্যতম কারণ, বিরোধী নেতা ও কর্মীদের বড় একটি অংশ এখনো কারাবন্দি অথবা নির্বাসিত।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। ছবি- সংগৃহীত

বর্তমানে তার শাসনামলে ১ হাজার ২০০-এরও বেশি রাজনৈতিক বন্দি আটক রয়েছে। দমন-পীড়নের মাত্রা এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, ২০২০ সালের নির্বাচনের সময় ব্যাপক গণআন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী বিরোধী নেত্রী স্বিয়াতলানা সিখানৌস্কায়া, যিনি বর্তমানে লিথুয়ানিয়ায় নির্বাসনে রয়েছেন, এবার কোনো ধরনের বিক্ষোভ বা প্রতিরোধের ডাকও দেননি।

এই বাস্তবতা ইউক্রেনের ইউরোময়দান বিপ্লবের সঙ্গে বেলারুশের এক মৌলিক পার্থক্য তুলে ধরে। ইউক্রেনে যেখানে গণসংগঠনের শক্তিশালী ভিত্তি ছিল, বেলারুশে কেজিবি এবং রাষ্ট্রযন্ত্র শুরু থেকেই বিরোধী শক্তিকে দমন করতে আরও সুসংগঠিত ও প্রস্তুত ছিল। পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদি রুশীকরণ প্রক্রিয়া হয়তো দেশটির জাতীয় সংহতি গড়ে তোলার সামাজিক কাঠামোকে দুর্বল করে দিয়েছে।

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, বেলারুশে লুকাশেঙ্কোর বিজয়কে ক্রেমলিন উষ্ণভাবে স্বাগত জানিয়েছে এবং তার কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতি রাশিয়ার সমর্থন আরও জোরালো হয়েছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘নির্বাচনে আপনার সুস্পষ্ট জয় আপনার উচ্চ রাজনৈতিক গ্রহণযোগ্যতা এবং বেলারুশ যে রাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে, তা জনগণের নিঃসন্দেহ সমর্থন পাচ্ছে, তারই প্রমাণ।’

তবে, চলতি বছরের জুনে আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা কিছুটা প্রশমিত করার লক্ষ্যে বেলারুশ এক আকস্মিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়। মিনস্ক সফররত মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগের উপস্থিতির পর, দেশটির কর্তৃপক্ষ বিরোধী নেত্রী স্বিয়াতলানা সিখানৌস্কায়ার কারাবন্দি স্বামী সিয়ারহেই সিখানৌস্কিসহ আরও ১৩ জন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়।

এই সিদ্ধান্তকে লুকাশেঙ্কোর গত কয়েক বছরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ছাড় হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

পুতিনের কাছে বেলারুশের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছেন লুকাশেঙ্কো

যখন লুকাশেঙ্কো নিজ দেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছিলেন, তখন রাশিয়া তাকে সমর্থন দিলেও তার বিনিময়ে দিতে হয়েছে চড়া মূল্য। প্রতিটি রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ছাড়ের মাধ্যমে বেলারুশ ধীরে ধীরে মস্কোর কৌশলগত নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।

এখন পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, বেলারুশের রাশিয়ায় কার্যত সংযুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, যা এক দশকের বেশি সময় ধরে ক্রেমলিনের পরিকল্পিত ‘অন্তর্ভুক্তির কৌশল’-এর বাস্তব রূপ বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার।

এই প্রেক্ষাপটে ইউক্রেন যুদ্ধের ফলাফল শুধু কিয়েভের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং তাদের জন্যও যারা বেলারুশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখছে। অনেক বেলারুশিয়ান ইউক্রেনের লড়াইকে সমর্থন করছেন এই আশায় যে, মিনস্ক এবং মস্কো দু’টি স্বৈরশাসনই একদিন পতনের মুখোমুখি হবে।

এদিকে লুকাশেঙ্কো ক্রমেই রাশিয়ার অনুগত ‘পুতুল’ নেতার ভূমিকায় আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। ২০২৫ সালের জুনে মিনস্কে অনুষ্ঠিত ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ফোরামে তিনি ‘ইউনিয়ন ২.০’ নামক একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন, যেখানে রাশিয়া ও অন্যান্য কর্তৃত্ববাদী মিত্রদের সঙ্গে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত একীকরণের আহ্বান জানান।

যদিও এই ফোরামকে সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে তুলে ধরা হয়, বাস্তবে তা ছিল বেলারুশকে রাশিয়ার কক্ষপথে আরও গভীরভাবে যুক্ত করার একটি মোড়কবদ্ধ প্রচেষ্টা।

পশ্চিমা নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি জোরালো সতর্কবার্তা। বেলারুশ এখন আর কোনও ‘বাফার রাষ্ট্র’ নয়; এটি রাশিয়ার এক কার্যকর সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। এই রূপান্তর বিশেষ করে ন্যাটোর পূর্বাঞ্চল পোল্যান্ড, বাল্টিক রাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের জন্য সরাসরি নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করছে। যদি এই প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে বেলারুশে রাশিয়ার দখল স্থায়ী রূপ পাবে এবং মস্কো পূর্ব ইউরোপে তার প্রভাব আরও শক্তভাবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।

এছাড়া ইউক্রেনের জাতীয় প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে, রাশিয়া বর্তমানে তাদের সামরিক বাহিনীর জুনিয়র অফিসার সংকট কাটাতে বেলারুশের যুবকদের রুশ সামরিক একাডেমিতে নিয়োগ দিতে তৎপর। বেলারুশ জুড়ে ‘ওপেন ডোরস ডে’ বা উন্মুক্ত সেনা-নিয়োগ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, যেখানে রাশিয়ার সামরিক কর্মকর্তারা তরুণ বেলারুশিয়ানদের রুশ বাহিনীতে যোগ দিতে উৎসাহিত করছেন।

ইউক্রেনীয় সামরিক বিশ্লেষক সের্হি হ্রাবস্কি মনে করেন, এই উদ্যোগ এমন এক সময় এসেছে যখন বেলারুশের সেনারা এখনো ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনে সরাসরি অংশ নেয়নি। এটি রাজনৈতিক বিবেচনায় নয়, বরং বাস্তব কারণ—তাদের প্রস্তুতির অভাব এবং রুশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়ের সীমাবদ্ধতার কারণেই।

ইউক্রেনে রুশদের পাশাপাশি বেলারুশিয়ান সৈন্যরাও লড়ছে

তবে সব বেলারুশবাসী তাদের দেশের এই পরিণতি মেনে নেয়নি। কেউ কেউ বিদেশে, বিশেষ করে ইউক্রেনের সম্মুখ সারিতে গিয়ে, পুরোনো রুশ সাম্রাজ্য পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করার পথ বেছে নিয়েছে।

রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের মুখে, অনেক বেলারুশিয়ান আজ মিনস্ক নয়, বরং ইউক্রেনের যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে। তাদের একজন, পাভেল শুরমেই সহযোদ্ধাদের কাছে যিনি ‘দেজিয়াডজকা’ নামে পরিচিত কালিনোস্কি রেজিমেন্টের কমান্ডার।

অতীতে তিনি একজন অলিম্পিক অ্যাথলেট ছিলেন এবং ২০০৪ ও ২০০৮ সালের অলিম্পিকে রোয়িংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। শুরমেই বলেন, ‘রাশিয়া এই অঞ্চলের ওপর নিয়ন্ত্রণ না হারালে বেলারুশ কখনোই মুক্ত হবে না। ইউক্রেনের বিজয় মানেই বেলারুশেরও বিজয়।’

২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত কালিনোস্কি রেজিমেন্টের নামকরণ করা হয়েছে কাস্টাস কালিনোস্কির নামে, যিনি ১৮৬৩ সালে বেলারুশ ও লিথুয়ানিয়ায় রুশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই ইউনিট নির্বাসিত বেলারুশিয়ানদের প্রতিরোধ সংগ্রামের অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছে।

রেজিমেন্টের অনেক যোদ্ধা পূর্ব ইউক্রেনের দনবাসে ২০১৪–১৫ সালের যুদ্ধে অংশ নেওয়া প্রবীণ যোদ্ধা, যারা পাহোনিয়া ডিটাচমেন্ট কিংবা ‘ট্যাকটিক্যাল গ্রুপ বেলারুশ’ নামের গঠনে লড়েছেন। আবার কেউ কেউ ২০২০ সালে বেলারুশে গণবিক্ষোভের সময় লুকাশেঙ্কোর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ভিন্নমতাবলম্বী, যারা পরে নির্বাসনে গিয়ে প্রতিরোধে যোগ দেন।

২০২২ সালের মার্চের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি বেলারুশিয়ান কালিনোস্কি রেজিমেন্টে যোগদানের জন্য আবেদন করে। এদের অনেকেই আগে রাজনৈতিক কারণে কারাবন্দি ছিলেন বা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এত বিপুল সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক আসায় যাচাই-বাছাই ও সরঞ্জাম ব্যবস্থাপনায় বিলম্ব ঘটে, ফলে তাদের মাঠে নামানোও কিছুটা ধীরগতিতে এগোয়।

রেজিমেন্টকে প্রযুক্তিগতভাবে সহযোগিতা করে আসছে বেলারুশিয়ান সাইবার পার্টিসানরা। শুরমেই বলেন, ‘সাইবার পার্টিসানরা আমাদের প্রচুর সহায়তা করছে। কারো তথ্য যাচাই করতে হলে আমরা তাদের কাছে যাই।’

এই স্বেচ্ছাসেবকদের পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের ওপর ভয় দেখানো এবং চাপ প্রয়োগ বেলারুশ সরকারের কৌশলের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা তাদেরকে একটি ‘হুমকি’ হিসেবে দেখার প্রমাণ।

নির্বাসিত থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ‘সেন্টার ফর নিউ আইডিয়াস’-এর পরিচালক আলেসিয়া রুডনিক বলেন, ‘এই আচরণ প্রমাণ করে যে বেলারুশ সরকার ও মস্কো দু’পক্ষই ইউক্রেনে যুদ্ধরত বেলারুশিয়ান স্বেচ্ছাসেবকদের কার্যক্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন।’

রুডনিক আরও বলেন, ‘প্রবাসী বেলারুশিয়ানরা কালিনোস্কি রেজিমেন্টকে ধারাবাহিকভাবে অর্থ, সরঞ্জাম, যানবাহন ও পুনর্বাসন সহায়তা দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছে। তারা অনেক সময় রাজনৈতিক নেতাদের চেয়েও বেশি কার্যকরভাবে তথ্য ও উপাদান সরবরাহ করেছে।’

ইউক্রেন যুদ্ধে বেলারুশ কি নতুন ফ্রন্ট হতে পারে?

বেলারুশিয়ান সাইবার পার্টিসানসের মুখপাত্র ইউলিয়ানা শেমেটোভেটস বলেন, ‘রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কাস্টাস কালিনোস্কি রেজিমেন্টকে যতটা সম্ভব সাহায্য করা আমাদের জন্য অপরিহার্য।’

তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে সময় এলে তারা নতুন কোনো ফ্রন্টে সমন্বয়ের জন্য প্রস্তুত থাকবেন।

এদিকে বিশ্লেষক আলেসিয়া রুডনিক বলেন, ‘এই স্বেচ্ছাসেবকদের ঠিক কতজন শেষ পর্যন্ত বেলারুশে ফিরে আসবেন তা বলা কঠিন। তবে তাদের সামরিক অভিজ্ঞতা ও সংগঠনের দক্ষতা ভবিষ্যতে খুবই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে পারে বিশেষ করে যদি বেলারুশ রাজনৈতিক পরিবর্তন কিংবা অস্থিরতার মুখোমুখি হয়।’

ইউক্রেনীয় আইনপ্রণেতারা এই সম্ভাবনাকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করছেন। ২০২৩ সালের জুনে কালিনোস্কি রেজিমেন্টের সদস্যরা ইউক্রেনের পার্লামেন্ট ভারখোভনা রাদার ‘ফর আ ডেমোক্রেটিক বেলারুশ’ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে লুকাশেঙ্কোর স্বৈরশাসন পতনের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টার পরিকল্পনা ও ভবিষ্যতের একটি গণতান্ত্রিক বেলারুশ গঠনের সম্ভাব্য রূপরেখা নিয়ে আলোচনা হয়।

এই যোদ্ধারা কবে নিজ দেশে ফিরতে পারবেন, তা অনিশ্চিত হলেও তারা যুদ্ধক্ষেত্রে মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেই দিনের জন্য, যেদিন মিনস্কেও মুক্তির সূর্য উদিত হবে।