জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে গাজীপুর নগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (৪ মে) সন্ধ্যায় এই হামলার সময় গাড়িতে থাকা হাসনাত আব্দুল্লাহ হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে বহনকারী গাড়িটিতেও ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলাকারীদের সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা তামিম তামজীদ উৎস।
এদিকে তামিম তামজীদ উৎসের এমন মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তার মন্তব্যের স্কিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে।
পরে ওই পোস্টের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ছাত্রদল নেতা তামিম তামজীদ উৎস। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, কিছুক্ষণ আগে আমার করা একটা পোস্ট নিয়ে আমি সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
তিনি লিখেছেন, হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপরে হামলার তথ্য যখন আমার সামনে আসে তখন আমি সেটা নিয়ে পোস্ট করার জন্য রিফাত রশিদের প্রোফাইলে যাই হাসনাতের ওপরে হামলার পরবর্তী কোনো ছবি/ভিডিও’র জন্য। হঠাৎ করে খেয়াল করলাম রিফাত রশিদের প্রোফাইলের পোস্টটা আর দেখা যাচ্ছে না। অতঃপর হামলার নিউজটাকে ভ্রান্ত ভেবে আমি একটি ট্রল পোস্ট করি। পরবর্তীতে যখন হামলার সত্যতা পাই তখন আমি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা ডিলিট করে দেই।
আমার ওই পোস্টের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবি করছি। একই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে যেন কোনো মানুষের ওপরে অন্যায়ভাবে হামলা করার সুযোগ কেউ না পায় সেজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়ার জন্য।
আজ সোমবার (৫ মে) গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) জাহিদ হাসান বলেন, 'বিপ্লবের একজন নেতার ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে মহানগর পুলিশের একাধিক দল হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে কাজ শুরু করে। গেল রাতে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। সোমবার সকাল পর্যন্ত ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'
গতকাল (৪ মে) সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান জানান, গাজীপুর মহানগরীর সালনার গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। পথে মহানগরীর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছালে যানজটে আটকে থাকা অবস্থায় কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে একদল দুর্বৃত্ত তার গাড়িতে হামলা করে দ্রুত পালিয়ে যায়। হামলায় তার গাড়ির একটি গ্লাস ভেঙ্গে যায়। এতে তিনি হাতে আঘাত পান।
তিনি আরও বলেন, 'এ ঘটনার পর তিনি গাড়িতে চড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথে বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি-এর (আইইউটি) শিক্ষার্থীরা তার নিরাপত্তায় এগিয়ে আসলে সেখানে তিনি গাড়ি থেকে নামেন। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। পরে সেখানে গাজীপুর মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত হয়ে তার সাথে কথা বলেন। পরে সেখান থেকে পুলিশের আরেকটি গাড়ি দিয়ে রাত সাড়ে আটটার দিকে তাকে নিরাপদে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়া হয়।'
আপনার মতামত লিখুন :