শনিবার, ১০ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৫, ০৮:১৩ পিএম

অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে: তারেক রহমান

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২৫, ০৮:১৩ পিএম

অন্তর্বর্তী সরকারের বক্তব্যে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে: তারেক রহমান

বিএনপির বর্ধিত সভায় বক্তব্য রাখছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু কিছু লোকের বক্তব্যে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। 

তিনি বলেন, আমরা এখনো এই সরকারকে সাহায্য করবো। আমরা আশা করবো, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষ যে নিরপেক্ষতা আশা করেন, তারা সেই নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির দ্বি বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আরও সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানান তিনি। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

তারেক রহমান তার বক্তব্যের শুরুতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং ২৪-এর ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহতদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘সর্বোপরি, ’৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের লাখো শহিদ এবং দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ধারাবাহিক সংগ্রামে যারা শহিদ হয়েছেন এবং ২০২৪ সালে জুলাই-আগস্টে তাঁবেদার অপশক্তির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে সাহসী বীর আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, রিয়া গোপ, আব্দুল আহাদ এবং বিএনপির পাঁচ শতাধিকসহ হাজারো শহিদ এবং আহত যোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি।’

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘হাজারও শহিদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর বাংলাদেশ পুনর্গঠনের এক অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। এই সুযোগ এবং সম্ভাবনা নস্যাৎ করার জন্য এরই মধ্যে নানা রকম ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সুকৌশলে রক্তপিচ্ছিল রাজপথে গড়ে ওঠা জাতীয় ঐক্য এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে।’

জাতীয় ঐক্য এবং জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখতে চেয়েছিল, তাদের ষড়যন্ত্র কিন্তু এখনো থেমে নেই। সংস্কার কিংবা স্থানীয় নির্বাচন, এসব ইস্যু নিয়ে জনগণের সামনে এক ধরনের ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির কাছে সংস্কারের ধারণা নতুন কিছু নয়। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পর দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং ১৯৯১ সালে দেশে সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা ছিল রাষ্ট্র ও রাজনীতির ময়দানে যুগান্তকারী সংস্কার।

তবে ষড়যন্ত্রের পথ ধরে পলাতক স্বৈরাচার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর সংস্কারের সব পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশকে চিরতরে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে গত দেড় দশকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল। দেশের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে নাজুক করে তুলেছিল। টাকা পাচার আর লুটপাট চালিয়ে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর করে দিয়েছিল। অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছিল দেশের সব সাংবিধানিক এবং বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান।’

তারেক রহমান বলেন, ‘রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার জন্য জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের কোনো বিকল্প নেই। রাষ্ট্র এবং সমাজে জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার শর্ত হলো- প্রতিটি নাগরিকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বাস্তবায়ন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য জনমনে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করলেও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো কোনো উপদেষ্টার বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য হতাশার কারণ হয়ে উঠছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের সব রাজনৈতিক দলের নিঃশর্ত সমর্থন থাকলেও সরকার এখনো তাদের কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে পারছে না।

সারা দেশে খুন-হত্যা-ধর্ষণ, চুরি-ছিনতাই ও রাহাজানি বেড়েই চলেছে। বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এখনো দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।’

অন্তর্বর্তী সরকারেরর উদ্দেশে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘যেখানে অন্তর্বর্তী সরকার দেশের বাজার পরিস্থিতি কিংবা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে পারছে না, সেখানে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের নামে কেন দেশের পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করতে চাইছে, এটি জনগণের কাছে বোধগম্য নয়।’ 

তিনি বলেন, ‘জনগণ মনে করে, স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে সেটি হবে সারা দেশে পলাতক স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের একটি প্রক্রিয়া, যা সরাসরি গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাবিরোধী। গণহত্যাকারী টাকা পাচারকারী দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার এই ফাঁদে বিএনপি পা দেবে না।'

এ সময় তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে মাফিয়া চক্রকে পুনর্বাসনের স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা থেকে সরে আসার এবং অবিলম্বে আগামী দিনের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনার রোডম্যাপ ঘোষণা করার আহ্বান জানান।

নতুন রাজনৈতিক দলকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাফিয়াপ্রধান হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর এ পর্যন্ত ১৬ থেকে ১৭টি নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি সব নতুন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে স্বাগত জানায়। তবে নির্বাচনের মাধ্যমে গ্রহণ কিংবা বর্জনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ।’

পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্ট। বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু-মিত্র বলে কিছু নেই। বরং একটি দেশের সঙ্গে অপর দেশের সম্পর্ক হবে 'পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষা, প্রয়োজন এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে। অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের নীতি ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। অর্থাৎ নিজ দেশ এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষাই হতে হবে প্রথম এবং প্রধান অগ্রাধিকার।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ পরিবার। এই পরিবারের নানা বিষয়ে আমাদের মতের অমিল থাকতেই পারে। তাই বক্তব্য দেওয়ার সময় ব্যক্তিগত পর্যায়ের বিরোধকে এড়িয়ে যাওয়া বাঞ্ছনীয়। ঐক্যই আমাদেরকে বারবার বিজয় আর সফলতা এনে দিয়েছে।

সুতরাং আমাদের খেয়াল রাখা জরুরি, আলোচনা-সমালোচনা যেন নিজেদের মধ্যকার ঐক্য বিনষ্টকারী কিংবা দলের ক্ষতির কারণ না হয়। প্রশংসাসূচক শব্দ চয়নের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা, বুদ্ধিমত্তা এবং পরিমিতি বোধের পরিচয় দেবেন।’

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ কিংবা দলের ইমেজ ক্ষুণ্ন হয় এমন কোনো কাজকে বিএনপি বিন্দুমাত্র প্রশ্রয় দেবে না জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণই বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।

বিএনপি জনগণকে বিশ্বাস করে। জনগণও বিএনপিকে বিশ্বাস করে। আপনার প্রতি, আপনাদের প্রতি ও বিএনপির প্রতি জনগণের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে জনগণের সঙ্গে থাকুন এবং জনগণকে সঙ্গে রাখুন। জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। আপনারা মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন।’

এ সময় দেশবাসীর উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি শুধু আপনাদের ভোটের পুনরুদ্ধারই নয়, আপনার ভোটের প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। আপনাদের সমর্থন পেলে বিএনপি এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যে সরকার আপনার কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।’

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!