যে সমীকরণে আটকে আছে জামায়াতের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে সরব আলোচনা এখন প্রার্থী মনোনয়ন ঘিরে। বিএনপি ইতোমধ্যে ২৩৭ আসনে তাদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিও দেড়শ আসনে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। তবে এখনো চূড়ান্ত তালিকা দেয়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা, কেন দেরি করছে জামায়াত? তারা কি জোটগত সমন্বয়ের অপেক্ষায়?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপির দ্রুত পদক্ষেপের বিপরীতে জামায়াতের এই ধীর কৌশল তাদের ভবিষ্যৎ নির্বাচনী হিসাব-নিকাশেরই অংশ হতে পারে। কারণ দলটি একদিকে প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শেষ করেছে, অন্যদিকে এখনও কৌশলগত নীরবতা বজায় রেখেছে।

প্রার্থিতা ঘোষণায় ধীরগতি কেন?

জামায়াতে ইসলামী কয়েক মাস ধরে সারাদেশে ধাপে ধাপে প্রাথমিক প্রার্থিতা ঘোষণা করেছিল। সম্ভাব্য প্রার্থীরাও মাঠে নেমে গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, মিছিল-মিটিংসহ নানা কার্যক্রমে ব্যস্ত ছিলেন। এতে স্থানীয় পর্যায়ে উচ্ছ্বাস দেখা দিলেও চূড়ান্ত তালিকা না আসায় কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

দলটির একাধিক নেতার বক্তব্যে ইঙ্গিত মিলছে, জোটগত সমন্বয়ই দেরির অন্যতম কারণ। এক বক্তব্যে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা ৩০০ আসনে প্রাথমিক প্রার্থী দিয়েছি। তবে কিছু আসনে আমরা নির্বাচন করব না, সেখানে জোট প্রার্থী দেয়ার সম্ভাবনা আছে।

আমিরের ব্যাখ্যা: ‘সব দিক বিবেচনায় সিদ্ধান্ত’

সম্প্রতি বিদেশ সফর শেষে দেশে ফিরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জাতির স্বার্থে সব দিক বিবেচনা করেই আমরা প্রার্থী ঘোষণা করব। বিএনপি ২৩৭ আসনে প্রার্থী দিলেও বলছে, সেটি চূড়ান্ত নয়। আমরা এক বছর আগেই প্রাথমিক প্রার্থী জানিয়ে দিয়েছি, কেন্দ্র থেকে চূড়ান্ত তালিকা সময়মতো প্রকাশ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা একা নির্বাচন করব না। দেশ ও জাতির স্বার্থে জোটগতভাবে অংশ নেব। তাই যথাসময়ে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।

সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ জানান, কিছু আসনের প্রার্থী পরিবর্তন হতে পারে। ক্লিন ইমেজ ও গ্রহণযোগ্য মুখদের প্রাধান্য দিয়েই চূড়ান্ত তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

গণভোটের দাবিতে আন্দোলন, জোট সমীকরণে নজর

নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আটটি দল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে মূল দাবি- জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন।

নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করাটাই এখন জাতীয় দায়িত্ব। প্রয়োজনে কিছু ব্যয় করেও গণভোট করতে হবে। কারণ, নির্বাচন না হলেও জুলাই সনদ কার্যকর হওয়া জরুরি।