‘সব দল নয়, মাত্র একটি দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়’- প্রধান উপদেষ্টার এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের নেতারা। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানান তারা। বিবৃতিতে গণতন্ত্রপন্থি সব দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চায় বলে দাবি করেন জোটের নেতারা।
বিবৃতিতে ১২–দলীয় জোটের নেতারা বলেছেন, ‘কেবল একটি দলই নয়, দেশের সব গণতন্ত্রপন্থি দল স্পষ্টভাবে নয় মাস ধরে ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলে এসেছে। বরং তিনি নিজেই কিছু মৌলবাদী, জনসমর্থনহীন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনৈতিক দলকে পাশে নিয়ে নির্বাচনের প্রশ্নটিকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছেন, করছেন।’
আগামী ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন করা সম্ভব বলে মনে করেন জোটের নেতারা। তারা বলেন, ‘আমরা ১২ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে দফায় দফায় এ বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচনের কথা বলেছি। দেশের প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলো সভা, সমাবেশ, সেমিনার, বক্তব্য, বিবৃতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বারবার এই কথা উচ্চারণ করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও নানাভাবে বিষয়টি সামনে এসেছে। আমরা চাই, দেশের জনগণের দীর্ঘদিনের চাওয়া তিনি পূরণ করবেন। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করা রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে ‘স্বৈরাচারী সরকারের পদলেহনকারী এবং স্বৈরাচারী হাসিনার আঁচলের নিচে আশ্রয় গ্রহণ করা’ অনেকেই ছিলেন। এই অশোভন আচরণে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত দল ও নেতারা ব্যথিত এবং দুঃখিত।’
‘কিছু অর্জনের উদ্দেশ্যে ভোট ও নির্বাচনকে বিলম্বিত’ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন জোটের নেতারা। তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সংগ্রাম ভোট ও নির্বাচনের জন্য। তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) কূটকৌশলে ক্ষমতা প্রলম্বিত করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হবে, তিনি ভিন্ন কোনো কিছু অর্জনের উদ্দেশ্যে ভোট ও নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চাইছেন। আর তাঁর সঙ্গে রয়েছেন কয়েকজন উপদেষ্টা।’
মৌলবাদী ও জনবিচ্ছিন্ন দলকে পাশে পাবেন না উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি তারা বলেন, ‘অবিলম্বে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে দেশকে মহাসংকটের হাত থেকে রক্ষা করা করুন। অন্যথায় দেশের মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তখন মৌলবাদী ও জনবিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দলকে পাশে পাবেন না।’
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ১২–দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপার) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দীন পারভেজ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রকিব, ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি এম এ মান্নান, প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দলের (পিএনপির) চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন।