জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য স্থাপিত ইসলামী ছাত্রশিবিরের হেল্প ডেস্কে সন্ত্রাসী হামলা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে রংপুর বিনোদন উদ্যান ও চিড়িয়াখানার কর্মচারী ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে রংপুর পুলিশ লাইন স্কুলের পাশে চিড়িয়াখানার সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ছয়জন আহত হন। এর মধ্যে ওয়ালিউল্লাহ ইসলাম ও আল আমিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপস্থিত ছাত্রশিবিরের একাধিক নেতাকর্মী জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাখার জন্য রংপুরের বিভিন্ন কেন্দ্রে হেল্প ডেস্ক বসিয়েছে ছাত্রশিবির। এসব ডেস্কে বিনামূল্যে সহযোগিতা করা হচ্ছিল।
তারা বলেন, এ কার্যক্রমে বাধা দেয় চিড়িয়াখানার কয়েকজন কর্মচারী। তারা জানিয়ে দেয়, ‘বিনামূল্যে সহযোগিতা করতে দেওয়া হবে না’, বরং তাদের নির্ধারিত জায়গায় টাকার বিনিময়ে জিনিসপত্র রাখতে হবে।
এক পর্যায়ে রংপুর মহানগর শাখার স্কুল বিভাগের কয়েকজন শিবিরকর্মীকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ীরা এসে জানিয়ে দেন, ওই এলাকায় হেল্প ডেস্ক বসানো যাবে না। পরে আরও কয়েকজন এসে শিক্ষার্থীদের ব্যাগ, মোবাইল, মানিব্যাগসহ আল আমিন ও দবিরুলকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় এবং মারধর করে।
এ ঘটনায় রংপুর মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেনের অনুসারীরা জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন শিবির নেতাকর্মীরা।
হামলার প্রতিবাদে শনিবার বিকেল ৬ টায় চিড়িয়াখানার সামনে থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রশিবির। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে নেতারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যুবলীগ নেতা মুরাদসহ সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার আলটিমেটাম দেন।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রংপুর মহানগরের প্রচার সম্পাদক আতিকুজ্জামান আতিক বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা দিগ্বিদিক ঘুরছে, এ সময় ছাত্রশিবির তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’
মহানগর ছাত্রশিবির সভাপতি নূরুল হুদা বলেন, ‘চিড়িয়াখানা সিন্ডিকেটের ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীরা আমার ভাইদের ওপর হামলা করেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সন্ত্রাসী মেহেদীসহ জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করতে হবে। একইসাথে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে চিড়িয়াখানার ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে যুবলীগ নেতা মুরাদসহ এই ঘটনার মাস্টারমাইন্ডদের আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিচ্ছি।’
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘হেল্প ডেস্কে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মোবাইল রাখা নিয়ে ছাত্রশিবিরের সঙ্গে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। গ্যারেজের কিছু টোকাই ছেলে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রিয়াজুল ও সোহেল নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’