রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ‘জাতীয় সমাবেশ’। এই সমাবেশে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি জনসমাগমের আশা করছে দলটির বেশ কিছু নেতা।
সংখ্যায় দলটি ১০ লাখের বেশি মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায়। সে লক্ষ্যে জামায়াত দেশব্যাপী ব্যাপক প্রস্তুতি, প্রচার এবং মাঠপর্যায়ের কাজ সম্পন্ন করেছে। ইতিমধ্যে সভার নিদিষ্ট সময়ের আগেই সোহরাওয়ার্দী তে জমায়েত হতে শুরু করেছে।
সমাবেশ উপলক্ষে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকায় মিছিল, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও তোরণ নির্মাণসহ নানা প্রচারণা চালানো হয়েছে। দলটি জানিয়েছে, সাতটি দাবিকে সামনে রেখে এই জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—২০২৪ সালের ৫ আগস্টসহ অতীতের গণহত্যার বিচার, রাষ্ট্রের সর্বস্তরে মৌলিক সংস্কার, ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
জামায়াত নেতারা জানিয়েছেন, সমাবেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ আরও কয়েকটি দল।
বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কি না, সে বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি নেতারা। তবে কেউ কেউ জানিয়েছেন, বিএনপি নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসান মাহবুব জোবায়ের বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জনসমাগম আশা করছি।’ তিনি জানান, এরই মধ্যে ১০ হাজারের বেশি বাস, একাধিক বিশেষ ট্রেন ও নৌযান রিজার্ভ করা হয়েছে।
সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘উত্তরবঙ্গ থেকে প্রায় ১৫০০ বাস, চট্টগ্রাম-ঢাকা ও রাজশাহী-ঢাকা রুটে বিশেষ ট্রেন এবং নৌপথে লঞ্চ রিজার্ভেশন দেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থেকেও সমাবেশে অংশ নেবেন।’
দলটি জানিয়েছে, মাঠে থাকবে প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। তাদের জন্য থাকবে নির্ধারিত পোশাক, ডিউটি কার্ড ও দায়িত্ব ভাগ। ঢাকা মহানগর ও আশপাশের জেলা থেকে আগতদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫টি পার্কিং স্পট।
দলটি আরও জানিয়েছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে ও বাইরে থাকবে ১৫টি মেডিকেল বুথ। প্রতিটিতে থাকবে এমবিবিএস চিকিৎসক, জরুরি ওষুধ এবং অ্যাম্বুলেন্স। সমাবেশের পুরো কার্যক্রম ড্রোন ও আধুনিক ক্যামেরায় ধারণ করা হবে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ সম্প্রচার করা হবে। মাঠে থাকবে বড় এলইডি স্ক্রিন।
জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সহযোগিতার আশ্বাসও পেয়েছে দলটি।