‘গত ১৬ বছরে সবচেয়ে নিপীড়িত সংগঠন হলো ইসলামী ছাত্রশিবির’

ফ্যাসিস্ট শাসনামলে সবচেয়ে নিপীড়িত সংগঠন হলো ইসলামী ছাত্রশিবির। বিগত ১৬ বছরে সংগঠনের ১০১ জন জনশক্তিকে শহীদ করা হয়েছে। ২০ হাজারেরও বেশি মামলায় গ্রেপ্তার করে নির্যাতনের মাধ্যমে অসংখ্য নেতাকর্মীকে চিরতরে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম।  

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিএনপির স্বনির্ভর-বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও সাবেক এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেল আয়োজিত টকশোতে অংশ নিয়ে দাবি করেন, ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে শিবির হত্যা করেছে।’ যে বক্তব্য গণমাধ্যম সূত্রে আমাদের নজরে এসেছে। ছাত্রলীগ কর্তৃক বাংলাদেশের সবচেয়ে আলোচিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে তিনি যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন, তা শুধু মিথ্যাচারই নয়, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইকে অশ্রদ্ধা ও প্রশ্নবিদ্ধ করার শামিল। রাজনৈতিক ও আদর্শিক প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হয়ে ছাত্রশিবিরের বিরোধিতা করতে গিয়ে তিনি মিথ্যাচারের সকল সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। আমরা তার এই নির্জলা মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

ঢাবির মত জাবিতেও শিক্ষার্থীরাই বিজয়ী: শিবির সভাপতি

বিস্তারিত পড়ুন

তারা বলেন, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে। আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অপরাধে তাকে শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে তারা, যা আদালতের রায় দ্বারা প্রমাণিত।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনকালে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে হেন কোনো অপরাধ নেই যা করেনি। খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, শিক্ষার্থী নির্যাতন, বিরোধী মত দমন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি ছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও তার অঙ্গসংগঠনসমূহের নৈমিত্তিক কর্মকাণ্ড। ছাত্রশিবির, ছাত্রদলসহ নির্যাতনের শিকার বিএনপি, জামায়াত এবং আওয়ামী বিরোধী সকল দল ও মতের সংগ্রাম ছিল তাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধেই।

তারা বলেন, বিএনপি নেত্রী নিলুফার চৌধুরী মনি ছাত্রশিবিরের বিরোধিতা করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের সীমাহীন অপরাধকে দায়মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, যা জনমনে প্রশ্ন তৈরি করছে—‘তিনি আসলে পতিত ফ্যাসিস্টদের এজেন্ট হয়ে কাজ করছেন কি না।’ শুধু তাই নয়, ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক ইমেজ বিনষ্ট করার জন্য পরিকল্পিতভাবে তিনিসহ একটি বিশেষ চক্র এমন মিথ্যাচার পথ বেছে নিয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা তার এই বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি এবং অবিলম্বে এই অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।