বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করে গণভোটের আয়োজন করতে হবে। জনগণ গণভোটে যে মতামত দেবে, জামায়াতে ইসলামী সেটিই মেনে নেবে।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি সারা বিশ্বে একটি জনপ্রিয় নির্বাচন পদ্ধতি, যেখানে প্রতিটি ভোটের যথাযথ মূল্যায়ন হয়। একজন ভোটারের মতামতও অবমূল্যায়িত হওয়ার সুযোগ নেই।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই সনদের আইনি স্বীকৃতি না দিলে ফ্যাসিবাদী চক্র জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করে দেবে। এতে দুই সহস্রাধিক শহীদের আত্মদান এবং পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি আহত-পঙ্গুত্ববরণকারী জুলাই যোদ্ধাদের স্বপ্ন ভেস্তে যাবে।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে কোনো দলই একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না হলে নির্বাচন দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীদের কবলে পড়বে। কালো টাকা ও অস্ত্রের জোরে জনগণের ভোটাধিকার হরণ করা হবে।
ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী’র উত্থাপিত ৫ দফা দাবি কোনো দলীয় এজেন্ডা নয়, বরং জাতির ভবিষ্যৎ ও জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষার প্রশ্ন। দেশ ও জাতির স্বার্থে ৫ দফা গণদাবি পূরণ করতে আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ঐক্যের বিকল্প নেই। ঐক্যবদ্ধ জাতিকে কেউ পরাজিত করতে পারে না।
তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনে কোনো পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। অন্যথায় পরিণতি হবে রাতের ভোটের সিইসি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতোই। অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধান উপদেষ্টা একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ও ঐকমত্য কমিশনের প্রধান। কিন্তু কিছু উপদেষ্টা দলীয় আনুগত্যের কারণে তাকে বিব্রত করছেন। তাঁদের নিরপেক্ষতা রক্ষায় রাজনৈতিক আনুগত্য ত্যাগ করতে হবে।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন বলেন, যারা আমাদের ভাইদের হত্যা, গুম ও নির্যাতন করেছে, তাদের বিচার অবশ্যই হতে হবে। জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী এ দেশের জনগণের কল্যাণে রাজনীতি করে। ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকাতে ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানের পথ চিরতরে রুদ্ধ হবে।
তিনি আরও বলেন, যারা এই দাবির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী শক্তিকে শক্তিশালী করতে চায়। জুলাই যোদ্ধারা দেশের মাটিতে আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠা হতে দেবে না।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন