বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে দেশে চরম অনিশ্চয়তা ও অশান্তির পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেন, ‘যদি অশান্তি সৃষ্টির জন্য কোনো নোবেল বা আন্তর্জাতিক পুরস্কার থাকত, তবে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশ সেই পুরস্কারের জন্য উপযুক্ত প্রার্থী হতো।’
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের জিএম কাদের এসব কথা বলেন। দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ জাতীয় পার্টির অবস্থান নিয়ে এই সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করা হয়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন এমন এক অশান্ত পরিবেশে রয়েছে, যেখানে দেশের মানুষ যেমন ভয়ে-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে, তেমনি বিদেশেও এর প্রতিক্রিয়া পড়ছে। বিশ্বের বহু দেশ এখন বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদানে অনীহা প্রকাশ করছে; একইভাবে তাদের নাগরিকদেরও বাংলাদেশ সফরে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’
জিএম কাদের বলেন, ‘দেশের বর্তমান অবক্ষয় থেকে রক্ষাকবচ, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন। বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়। সে কারনে প্রয়োজন সরকার পরিবর্তন। তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন ও সে সরকারের অধীনে আগামী তিন মাসের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশ গ্রহনমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন মনে করি। এ সরকার যত তাড়াতাড়ি বিদায় নেবেন, দেশের জন্য ততই মঙ্গল।’
গত ১১ অক্টোবর জাতীয় পার্টির কাকরাইল অফিসের সামনে আয়োজিত কর্মী সমাবেশ পুলিশি বাধায় পন্ড হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হঠাৎ করে কোন ধরনের উস্কানি ছাড়াই শান্তিপূর্ন সমাবেশে পুলিশ জলকামান দিয়ে পানি নিক্ষেপ করা শুরু করে। উপস্থিত নেতারা কিছু বুঝে ওঠার পূর্বেই জনবহুল সমাবেশের মাঝখানে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছোড়া শুরু করে এবং পরবর্তীতে টিআর গ্যাস নিক্ষেপের মাধ্যমে সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
তিনি বলেন, ‘সমাবেশে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে প্রান বাঁচাতে এদিক ওদিক ছোটা ছুটি করলে পুলিশ তাদের উপর লাটিচার্জ শুরু করে। সরকারী বাহিনীর এমন কর্মকান্ড অন্তবর্তী সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন বলে মনে করি।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারের এমন পক্ষপাত মূলক আচরন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড তৈরি নিশ্চিত করে না। এই সরকার কোন নিরপেক্ষ, সুষ্ঠ ও অংশগ্রহন মূলক নির্বাচনের আয়োজন করতে ইচ্ছুক নয়, আমাদের মত নিবন্ধিত দলের স্বাভাবিক শান্তিপূর্ন কর্মকান্ডে বাধাদান এটাই প্রমান করে।’
সংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভুইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, ইন্জিনিয়ার মাইনুল রাব্বি চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম প্রমুখ।