বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি এখন নির্ভর করছে তার নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ওপর। দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ফেরার আগে নিরাপত্তা ইস্যুটি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং এ নিয়ে দলের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
বিশেষ করে তারেক রহমান দেশে ফিরলে তাকে কীভাবে সুরক্ষা দেওয়া হবে—এই বিষয়ে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে বলে জানায় বিএনপির ঘনিষ্ঠ সূত্র। জানা গেছে, সরকারের পক্ষ থেকেও তার নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
সূত্র বলছে, বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত হলেই বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরার আনুষ্ঠানিক তারিখ ঘোষণা করা হবে। এমন অবস্থানই এখন দলের অভ্যন্তর থেকে পরিষ্কারভাবে জানা যাচ্ছে।
এদিকে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দলের পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বুলেটপ্রুফ এসইউভি কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি গাড়ির অনুমোদন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত কয়েক মাস ধরে বিএনপি মহাসচিব ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্য বলে আসছেন খুব শিগগিরই দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। গতকাল বিকেলে গুলশানে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিন বা তারিখ না বললেও নভেম্বর মাসে ফিরবেন এমন ইঙ্গিত দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আপনারা খুব শিগগিরই জানতে পারবেন নির্ধারিত তারিখ। আশা করি, নভেম্বরের মধ্যেই তিনি দেশে ফিরবেন।
জানা গেছে, দেশে ফেরার পর তারেক রহমান গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজা ও ১৯৬ নম্বর বাসা মিলিয়ে থাকবেন। ফিরোজায় আছেন মা বেগম খালেদা জিয়া। বিচারপতি আবদুস সাত্তার সরকারের সময় দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত ১৯৬ নম্বর বাড়িটি খালেদা জিয়ার নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। এত বছর বাড়িটি তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নামজারি করা ছিল না। অন্তর্বর্তী সরকার গত ৪ জুন বাড়িটির নামজারির কাগজ খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেন। এই বাড়ির সংস্কারকাজ চলছে।
দলীয় সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে তারেক রহমানের জন্য ট্রাভেল পাস ইস্যুসহ সব প্রক্রিয়া চলছে। তারেক রহমান বর্তমানে ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন (আইএলআর) স্ট্যাটাসে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন।
গত অক্টোবর মাসে বিবিসি বাংলায় এক প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেছেন, কিছু সঙ্গত কারণে হয়তো ফেরাটা হয়ে উঠেনি এখনো। তবে সময় তো চলে এসেছে মনে হয়। ইনশাআল্লাহ দ্রুতই ফিরে আসব।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের দেশে ফেরা শুধু বিএনপির রাজনীতিতেই নয়, দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন গতি আনবে। বিএনপির নেতৃত্ব পুনর্গঠন ও আসন্ন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে হলে তারেক রহমানের দেশে ফেরা গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। তবে বিষয়টি নিরাপত্তা ইস্যুর ওপরই এখন নির্ভর করছে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন